এম. সাখাওয়াত হোসেন মিথুন
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পার্শ্ব সংযোগের কারণে কোনভাবেই লোডশেডিং কমছেনা। সরকার কর্তৃক বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকার পর থেকে এ পর্যন্ত যত মার্কেট, বাড়ি তৈরি হয়েছে তার কোনটি বিদ্যুৎ বিহীন নেই। এ সকল বাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানে পার্শ্ব সংযোগে বিদ্যুৎ সরবারহ চালু রয়েছে। আর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গত সেপ্টেম্বর মাসে শুধুমাত্র পার্শ্ব সংযোগের কারণে জরিমানা আদায় করেছে ১২ লক্ষ ১ হাজার ২শত ৭৪ টাকা। আর এ তথ্য স্বয়ং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরের। পার্শ্ব সংযোগের কারণে এ শীতের মধ্যে ও ঘন্টার পর ঘন্টা মফস্বল এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। আসছে সেচ মৌসমে ইরি-বোর চাষের জন্য যা হুকমি হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তর হাজীগঞ্জে। আর এ হাজীগঞ্জে পার্শ্ব কিংবা অবৈধ সংযোগের পরিমান শত শত। এর মধ্যে যে কয়টি পার্শ্ব সংযোগের খবর পল্লী বিদ্যুৎ অফিস অবগত শুধুমাত্র তাদেরকে এ সংযোগের জন্য জরিমানা গুণতে হয়। যাদেরকে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে তাদের পরিমান একেবারে নগন্য। সংখ্যায় বেশীরা অবৈধ সংযোগের আওতায় রয়ে গেছেন। আর এ চিত্রটি শুধু মাত্র হাজীগঞ্জে নয়। এ চিত্র চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরের আওতাধীন জেলার ৭টি উপজেলা সহ পার্শ্ববর্তী লাকসাম উপজেলার একাংশ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার অল্প কয়েক দিন পর অনবরত লোডশেডিং কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ বন্ধ রাখার জন্য সার্কূলেশন জারি করে। যা আজও বলাবৎ রয়েছে। বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ থাকলেও কোথাও নতুন বাড়ি,ঘর কিংবা মার্কেট নির্মাণ বন্ধ থাকেনি। গত কয়েক বছরে জেলার আনাছে-কানাছে ও উপজেলার সদর দপ্তর গুলোতে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার বাড়ি, ঘর কিংবা মার্কেট। এসব বাড়ি কিংবা মার্কেট গুলো কোন ভাবে বিদ্যুতের অভাবে থাকেনা কারন এরা কোন না কোন ভাবে পার্শ্ব লাইন কিংবা অবৈধ সংযোগ নিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছে। আর এতে করে দিন দিন সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব আয়, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ হারাচ্ছে তাদের মূল্যবান যন্ত্রপাতি আর সাধারণ গ্রাহক ভূগছে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংয়ে। পার্শ্ব লাইন কিংবা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ব লাইনের বিষয়ে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ খবর খুব কম রাখে। যেখানে এই জাতীয় সংযোগ রয়েছে সেখানে জরিমানা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জরিমানা দেওয়া গ্রাহক যতক্ষন না পর্যন্ত তাদের অবৈধ সংযোগ বন্ধের বিষয়ে অফিসকে লিখিত ভাবে না জানাবে তৎক্ষন পর্যন্ত এ গ্রাহকের মূল বিলের সাথে জরিমানা টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর এ আদায়টি কত কাল চলবে তা কেউ জানে না। আরেকটি সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ব সংযোগ কিংবা অবৈধ সংযোগের কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কোটি কোটি টাকার সামগ্রী দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ওভার লোডে। এ বিষয়ে উদাহরণটি এমন, কোন এলাকায় একটি ট্রান্সফর্মারের আওতায় ৫০টি মিটার কিলো ওয়াট অনুযায়ী সংযোগ দেওয়া হয়। এ সংযোগের বাহিরে কেউ একই সংযোগ থেকে পার্শ্ব লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নিয়ে ব্যবহার করলে ঐ ট্রার্ন্সফমার এবং উক্ত লাইনের উপর ওভার লোডের চাপ পড়ে। আর তখনই মূলবান ট্রার্ন্সফমার কিংবা বিদ্যুৎ লাইনটি নষ্ট অথবা বিকল হয়ে যায়। সর্বসার্কুল্যে অবৈধ সংযোগ কিংবা পার্শ্ব লাইন বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য হুমকি স্বরূপ এমনটাই পরিস্কার কথা বিজ্ঞ জনদের। এ সব বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সদর দপ্তরের এ.জি.এম (কম) একে আজাদ বলেন, পার্শ্ব সংযোগ কিংবা অবৈধ লাইনের বিষয়ে আমরা প্রথমে মিটার মালিককে জরিমানা করে থাকি। এরপর ঐ গ্রাহক তার অবৈধ লাইনটি সচল রাখলে তার মিটারের লাইনটি বিচ্ছিন্ন করে থাকি। আরেক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পার্শ্ব সংযোগের কারনে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়ে থাকে। আর এ কারনে লোডশেডিং কিছুটা হয়ে থাকতে পারে।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৯ কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।
