ফাহিম শাহরিয়ার কৌশিক খান
রেলওয়ের পুকুর বিনা অনুমতিতে ভরাট করে লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করছে একটি সংঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্র। চাঁদপুর শহরের সবচে’ ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা জামতলা, নিশি বিল্ডিং, মাদ্রাসা রোডের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি ও কালভার্ট পাইলিংয়ের মাধ্যমে ভরাট দ্রুত গতিতে চলছে। এ ব্যাপারে রেলওয়ের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা রহস্যজনক। বর্ষার সময় ও সামান্য বৃষ্টি হলেই কৃত্রিম বন্যা দেখা দিয়ে যাতায়াতে ও চলাচলে মারাত্মক বিঘেœর সৃষ্টি হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী হাজার হাজার মানুষের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে এ ভরাটকে কেন্দ্র করে।
সরজমিনে চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, মিশন রোড, কোর্ট স্টেশন এলাকা, উত্তর শ্রীরামদী, বকুলতলা, জামতলা, কাঁচা কলোনী, নিশি বিল্ডিং, মাদ্রাসা রোড, কবরস্থান রোড, রেলওয়ে ক্লাব রোড, যমুনা রোড, ৩নং কয়লাঘাট, আক্কাছ আলী এলাকা ও টিলা বাড়ি এলাকাসহ এসব এলাকাগুলোতে রেলওয়ের শ’ শ’ একর জমি স্থানীয় রেলওয়ের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে গোপনে সমঝোতার মাধ্যমে এক শ্রেণীর লোক এ জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করে বিনা দলিলে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রেলওয়ে জায়গায় অবৈধভাবে দখল বুঝিয়ে দিচ্ছে। মূলতঃ চাঁদপুর রেলওয়ের জায়গা নিয়ে হরিলুট চলছে। যেভাবে দখল হচ্ছে, এতে করে মনে হচ্ছে এ জায়গার যেনো কোনো মালিক নেই। রেলওয়ের পুকুর ভরাট করে বিক্রির সাথে জড়িত চক্রটির ভয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও এলাকাবাসী কথা বলতে পারছে না। তাদের কাছে এলাকাবাসী এক প্রকার জিম্মি হয়ে রয়েছে।
ইদানীংকালে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন এলাকার রেলওয়ে ক্লাবের পূর্বদিকে রেলওয়ে কোয়ার্টারের পেছনে সরকারি প্রায় ২ একরের একটি পুকুর ও এক একরের অরেকটি পুকুর রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এ পুকুরগুলোর চার পাড়ে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার বসবাস করছে। এ পরিবারগুলোর নিত্যদিনের ব্যবহারের ও বৃষ্টির পানি এ পুকুরগুলোতে গিয়ে পড়ে। গত কিছুদিন পূর্বে পৌর এলাকার উন্নয়নে মাদ্রাসা রোডসহ বিভিন্ন স্থানে ৩টি কালভার্ট নির্মাণ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে। এ কালভার্ট নির্মাণকে কেন্দ্র করে বালি মাটির প্রয়োজনে জনৈক নূরু দেওয়ান এখানে মিনি ড্রেজারের মাধ্যমে বালি ফেলছে।
এলাকাবাসী জানায়, এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি প্রভাবশালী চক্র মাদ্রাসা রোড, রেলওয়ে ক্লাব রোডসহ বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ডোবা ও দু’টি বড় আকারের পুকুর ভরাটের কাজে লিপ্ত রয়েছে।
এছাড়া জামতলা, কাঁচা কলোনী, নিশি বিল্ডিং, জেটিসি শ্রমিক কলোনী, কয়লা বাগান, কবরস্থান রোডের হাজার হাজার মানুষের ব্যবহৃত পানি পুকুর, ছোট ছোট খাল হতে নেমে কবরস্থান এলাকার খাল দিয়ে নেমে মেঘনা নদীতে প্রবেশ করে উক্ত এলাকার পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা সচল রয়েছে। মাদ্রাসা রোডের মাথায় একমাত্র খালটি বিগত দিনে ভরাট করে অনেকাংশে ছোট করে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে মাদ্রাসা রোডস্থ কালভার্ট সংলগ্ন স্থানের পরিবারের লোকজন খালের পাড়ে জিইও ট্যাক্সটাইল ব্যাগ বিছিয়ে সেখানে ড্রেজারের মাধ্যমে বালি ভরাটের কাজ চলছে। এ খালটি বর্তমান অবস্থান থেকে আরো ছোট হয়ে গেলে এখান দিয়ে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগে পড়বে হাজার হাজার এলাকাবাসী। এছাড়া বর্ষার সময় পানি সঠিকভাবে নিষ্কাশন হতে না পেরে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হবে। বড় স্টেশন এলাকায় জলাবদ্ধতা রোধে রেলওয়ের একের পর পর এক পুকুর অবৈধভাবে ভরাট বন্ধে রেল কর্তৃপক্ষের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
শিরোনাম:
বুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।