প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের শনি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের দ্বায়িত্ব পালন করেন মানসিক রোগে আক্রান্ত ডাক্তার হামিমা। তিনি দ্বায়িত্ব পালন করাকালে অল্পতেই ক্ষুব্দ হয়ে উঠেন।
জানা যায়, তিনি নাকি মানসিক রোগে ভুগছেন। তাও আবার গত কয়েক মাস পূর্বে তার মায়ের মৃত্যুর পর থেকে। প্রায় সময় দেখা যায় তিনি দ্বায়িত্ব পালন করা কালে মুমূর্ষ রোগীদেরকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য আনা হলে তিনি ভর্তি করতে গড়িমসি করেন। রোগীর অভিভাবকদেরকে বেকায়দায় ফেলে দেন। এককথায় বলা চলে তিনি যে হাইকোর্ট আর সুপ্রিমকোর্টের নমুনা দেখান তাতে করে এই মুমূর্ষ রোগীরা জরুরি বিভাগের সামনেই মারা যেতে পারে। বিশেষ করে রোগীরা অন্যত্র থেকে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির জন্য আসলে ডাক্তার হামিমা ঐ রোগীদেরকে ভর্তি করতে রাজি হননা। তেমনি গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় আশিকাটি এলাকার প্রিয় লাল দাস তার আড়াই মাস বয়সী শিশুপুত্র প্রলয়কে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নবজাতক শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ মোঃ আব্দুল আজিজ মিয়াকে ব্যাক্তিগত চেম্বারে দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিলে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য তিনি লিখে দেন। প্রিয় লাল দাস তার শিশু পুত্রকে জরুরি বিভাগে ভর্তি ফরম লিখে কর্তব্যরত চিকিৎসকের স্বাক্ষর আনতে ডাক্তার হামিমার কাছে গেলে তিনি এই মুমূর্ষ শিশুটিকে ভর্তি করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। ডাক্তার হামীমা প্রিয়লালকে বলে দেন বর্হিঃবিভাগ থেকে টিকেট সংগ্রহ করে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ডাক্তার দেখিয়ে তাতে ভর্তি লিখে আনার জন। প্রিয়লাল দাস ডাক্তার আব্দুল আজিজ মিয়ার লিখিত কাগজ দেখালে তিনি আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
একইভাবে হামানকর্দ্দী গ্রামের (৬০) বছর বয়সী পঙ্গু বেলায়েত হোসেন সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সার্জারী ডাক্তার মনিরুল ইসলামের ব্যাক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা নেন। ডাক্তার মনিরুল ইসলাম তার ব্যবস্থাপত্রে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির জন্য লিখে দেন। ঐ কাগজটি দেখতে পেয়ে ডাক্তার হামিমা পঙ্গু বেলায়েত হোসেনকে গড়িমমি করেন। তিনি এ পঙ্গু রোগীটিকেও বর্হিঃবিভাগ থেকে টিকেট করে দ্বিতীয় তলায় ডাক্তার দেখিয়ে ভর্তি লিখে আনার জন্য বলেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না বর্হিঃবিভাগ থেকে টিকেট কাটা না হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি রোগীদেরকে ভর্তি করেন না। গত দু’দিন আগে গর্ভবতী দু’ নারীকেও তিনি ভর্তি করেননি। ঐ গর্ভবতী দু’নারী গর্ভধারণ চলাকালে অন্যত্র ডাক্তার দেখানোর কারনেই রোগীদেরকে তিনি ভর্তি করেননি। প্রসব ব্যাথায় এ দু’নারী কাতরাতে থাকলেও মানসিক রোগে আক্রান্ত ডাক্তার হামিমার মনে একটুও মায়া জন্ম নেয়নি। সেদিন অনেকের মুখেই শোনা গেছে এই ডাক্তার কি নারীর জাতির নয়? ডাক্তার হামিমা গতকাল রোগী ভর্তি নিয়ে টালবাহানা করলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ডাক্তার হারুনুর রশীদ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মাহমুদুন্নবী মাসুমকে অবগত করলে তারা বলেন, এ মহিলা একজন পাগল। একে দিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চলতে পারে না। প্রতিনিয়ত তিনি রোগী ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সাথে বাক্বিতণ্ডায় জড়িয়ে থাকেন। রোগী ভর্তি না করানোর বিষয়টি ডাক্তার হারুনুর রশিদ সাগরকে জানানো হলে, তিনি সরকারি জেনারেল হাসপাতালে তত্বাবধায়ক ডাক্তার প্রদীপ কুমার দত্তের সাথে সেলফোনে যোগাযোগ করেন।
তিনি জানান, আজকের পর (বৃহস্পতিবার) থেকে ডাক্তার হামীমাকে জরুরি বিভাগের দ্বায়িত্ব থেকে সড়িয়ে দেয়া হবে। এমন একজন মানসিক রোগী হয়ে ডাক্তারের দ্বায়িত্ব পালন করবেন কিভাবে? কেননা তাকেই পাবনার হেমায়েতপুরের মানসিক চিকিৎসালয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।
শিরোনাম:
বুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।