মতলব উত্তর : কয়েকদিনের অব্যাহত প্রবল বর্ষণে মতলব উত্তর মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর এভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় সেচ প্রকল্পটি কৃষকের জন্য অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার নাউরী, কলাকান্দা, মিলারচর, মাথাভাঙ্গা, পাঁচআনী, বড় হলদিয়া, ছোট হলদিয়া, লুধুয়া, একলাছপুর, জোড়খালী, শিকিরচর, ছেংগারচর, কেশাইরকান্দি, জীবগাঁও, পাঠান বাজার, ঝিনাইয়া, মরাদন, ইসলামাবাদ, অলিপুর, নয়াকান্দি, সুজাতপুর ঠাকুরচর, রুহিতারপাড়, হানিরপাড়, বদরপুর, বাগানবাড়ি, নিশ্চিন্তপুর, দূর্গাপুর, লবাইরকান্দি, ইসলামাবাদ, ফতেপুরসহ প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতায় কারনে আউশ ধানের বীজতলা ও রোপা আউশ, বগি পাট, আখ, ফল ও কাঠ গাছের বাগান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মৎস্য খামার তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষক ফসলি জমিতে আবাদ করতে পারছে না। বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ও আবাদ করতে না পারায় কৃষক পরিবার হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কৃষক প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা না পাওয়ায় এ সেচ প্রকল্পকে তাদের জন্য অভিশাপ মনে করছেন।
কয়েকদিনের বর্ষণে জমিতে পানি জমে গিয়ে মুগডাল, তিল, তরকারি, বোরো ধান নষ্ট হচ্ছে। অপরদিকে কাটা বোরো ধান শুকাতে পারছেনা। পাকা ধান কাটা যাচ্ছে না। এতে কৃষকের পাকা ধান গোলায় তুলতে পারছে না।
বড় মরাদোন গ্রামের কবির হোসেন সরকার বলেন, ‘জানি না এহন আমরা কি করুম, হুদিনা কালে (শুকনা মৌসুমে) পানি পাই না, বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জইম্মা সব ফসল তলাইয়া যায়। ফসল করতে গিয়া টাকা শেষ হইয়া যায়। ক্ষতির কারণে ফসল পাই না। এমনে আর কত দিন চলুম’।
ঠাকুরচর গ্রামের বিল্লাল মেলকার বলেন, ‘প্রকল্পটি তৈরি হওয়ার পর থেকে আমরা বর্ষা আসলেই বৃষ্টির পানিতে ডুবে মরি। আমাদের চাষের জমি তলিয়ে ফসল নষ্ট হয়ে যায়’। পাউবো কর্তৃপক্ষকে এ জলাবদ্ধতার ব্যাপারে জানালেও এ পর্যন্ত কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেয় নাই।
প্রকল্প কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনায় ত্র“টি, খালগুলো কচুরিপানা দিয়ে আবদ্ধ থাকায় ও পাম্প ধারা দ্রুত গতিতে বৃষ্টির পানি প্রকল্পের বাইরে না সরানোর ফলে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ার কারণ বলে সচেতন মহল মনে করেন। অভিযোগ রয়েছে পানি সরানোর এ খালগুলো সংস্কারের নামে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা লুটপাট করা হয়। সংস্কারের নামে কিছুই হয় না।
জলাবদ্ধতা কয়েকদিন যাবত স্থায়ী হলেও পাউবো কর্তৃপক্ষ পানি সরানোর দ্রুত ব্যবস্থা না করায় ফসলহানি ঘটছে। এভাবে প্রতি বছরই জলাবদ্ধতায় এ প্রকল্পের কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি হয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য জলাবদ্ধতা নিরসনের স্থায়ী সমাধান জরুরি বলে দাবি কৃষি পরিবারগুলোর। তা না হলে মূলধন হারিয়ে কৃষক পথে বসবে।
শিরোনাম:
শনিবার , ১২ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।