শওকত আলী।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়ি বাঁধে সুরঙ্গ সৃষ্টিসহ ব্লক ধসে পড়েছে। ফলে পুরো বাঁধ এখন হুমকির মধ্যে রয়েছে। জোয়ারে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রচ- ঢেউয়ে বাঁধের এখলাছপুর থেকে মোহনপুর এলাকা পর্যন্ত কয়েকটি স্থানে ব্লক ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া বাঁধের বেলতলী থেকে গালিমখা ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত স্থানে সুরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় এলাকা বাসী জানিয়েছে। এ কারণেই ঐসব এলাকার লোকজন এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কোন কোন এলাকার অবস্থা নাজুক পরিস্থিতি হয়ে পরেছে। এখনি বাঁধ সংস্কার না হলে চলতি বর্ষায় পানির চাপে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অরদিকে বাঁধ এলাকার হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, মৎস্য খামার ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করছে ঐ সব এলাকার লোকজন। এনায়েতনগর এলাকায় বাঁধ ধসের খবর শুনে উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ, নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসির উদ্দিন সরোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মোহনপুর গ্রামের রফিক সরকার (৬০) জানান, কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রচ- ঢেউয়ে বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে ব্লক সরে গেছে। অচিরেই বাঁধ মেরামত না করলে বড় ধরনের দুর্যোগ দেখা দিতে পারে বলে তিনি দাবি করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, পাউবো’র ঠিকাদার এনায়েতনগর গ্রামের মাহমুুদুল হাসান বাঁধ এলাকা থেকে ধনাগোদা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ও বালু পাউবো’র জমির ৬ একর জমি দখল করায় বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ ঠিকাদার মাহমুদুল হাসান অবৈধভাবে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ চেষ্টা করছে।
বাঁধ এলাকায় অবৈধভাবে কাজ করার অপরাধে জয়নাল আবেদীন নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসির উদ্দিন সরোয়ার। তিনি ঐ এলাকায় সব কর্মকা- বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আতাউর রহমান জানান, এ জমি লিজ দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে মাহমুদুল হাসান দখল করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নয়াকান্দি এলাকার খোরশেদ ভূঁইয়া জানান, আমাদের এলাকার আতংকিত লোকজন রাতে নদী তীরবর্তী বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবহারকারী সরকার মো. আলাউদ্দিন জানান, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ধসে পড়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা ব্যাগ দিয়ে বালি ফেলার ব্যবস্থা নিয়েছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ মঞ্জু বলেন, নদীতে ঢেউয়ে বাঁধের কয়েকটি স্থানে ধসের খবর শুনে পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়। ঐসব এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
আমি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমকে জানিয়েছি। ব্লক ধসে পড়া রোধে তিনি ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছেন।