ফাহিম কৌশিক খান
সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পরিবেশের ক্ষতিকারক অবৈধ পলিথিন চাঁদপুরের বাজারে বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শহর গ্রামের বাজার গুলোতে এ নিষিদ্ধ পলিথিন অবৈধভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে বিক্রি করায় এর ব্যবহার অতীতের ন্যয় দিন দিন বেড়েই চলছে। এ কারণে পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটবে বলে আশা করছেন সচেতন মহল। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার অবৈধ পলিথিনের চালান যাত্রীবাহী লঞ্চযোগে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে অহরহ আসছে। শহরের পুরাণবাজার, বাবুরহাট, ফরিদগঞ্জের অসাধু ব্যবসায়ীরা পলিথিন এনে চাঁদপুরের বাজারগুলোতে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত এসব অবৈধ পলিথিনের চালান চাঁদপুরে প্রবেশের পেছনে একটি বড় ধরণের সিন্ডিকেট চক্র রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে রাতে চাঁদপুরের উদ্দেশে যে লঞ্চ চাঁদপুরে আসছে সেসব লঞ্চযোগে পলিথিনের বড় চালান প্রতিদিন লঞ্চ টার্মিনালে আসার সাথে সাথেই পুরাণবাজারের ব্যাবসায়ীদের মালগুলো নৌকাযোগে লঞ্চ থেকে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাবুরহাট, ফরিদগঞ্জের ব্যাবসায়ীদের মালগুলো ইচুলি ঘাটে যাওয়ার পর ভ্যান গাড়ি ও পিকাপযোগে তা প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাচ্ছে। অবৈধ নিষিদ্ধ ঘোষিত এসব পলিথিনের বড় কোন চালান এ যাবৎকালে প্রশাসন ধরতে না পারায় তারা এভাবে দিনের পর দিন আরো সক্রিয় হয়ে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ পলিথিনের রমরমা ব্যবসা। পুরাণবাজারের মসজিদ পট্টি ও ট্যাংকপট্টি এলাকায় বেশ ক’টি দোকানে অবৈধ এ পলিথিন বিক্রি করে রাতারাতি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। নিষিদ্ধ ঘোষিত এসব পলিথিন বন্ধের জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুরাণবাজারে ইতিপূর্বে পলিথিন ব্যাবসায়ী কাদির শেখ ও জগবন্ধুর দোকানে অভিযান চালায়। ঐ সময় তাদের দোকানে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন জব্দ করে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে। তাতেও বিন্দু পরিমাণ সতর্ক হয়নি অবৈধ পলিথিন ব্যাবসায়ীরা। কারণ ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ যাওয়ার পূর্বে পুুরাণবাজারের ট্যাংক পট্টির পলিথিন ব্যাবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ায় তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায়। সম্প্রতিকালে বাবুরহাটের পলিথিন ব্যাবসায়ী বিল্লালের বেশ ক’টি চালান যাত্রীবাহী রফরফ লঞ্চযোগে আনার পর পুলিশ হাতে নাতে আটক করার পর উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। পলিথিন ব্যাবসায়ী বিল্লাল তার অবৈধ পলিথিনের চালান, লঞ্চ থেকে নামিয়ে প্রতিদিন ভোর ৪ টা থেকে ৫ টার মধ্যে ভ্যান গাড়িযোগে বাবুরহাট বাজারে তার দোকানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ, শাহারাস্তি, কচুয়া এলাকায় এ অবৈধ পলিথিন বিক্রি করে। এ অসাধু ব্যাবসায়ীরা এভাবেই দিনের পর দিন সরকারকে ফাঁকি দিয়ে পলিথিন সরবরাহ ও বিক্রি নিজেরাই লাভবান হচ্ছে। এ পলিথিন ব্যবহারের কারণে যেমনটি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে তেমনিভাবে মাটির উর্বরতাও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এতে করে বৃক্ষ ও ফসলাদি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ অবৈধ পলিথিন বন্ধের জন্য চাঁদপুরের সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এখনি যদি নজরদারি না দেন তাহলে এর প্রভাব দিন দিন আরো বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন চাঁদপুরের সচেতন মহল।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ৮ জুলাই, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।