চাঁদপুরে প্রতিদিনই মলমপার্টির খপ্পরে পড়ে যাত্রী ও চালকরা অচেতন হয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে। চাঁদপুর ওয়্যারলেছ থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়ে কচুয়া বাদামতলী এলাকায় সিএনজি চালককে অচেতন করে মলমপার্টির সদস্যরা সিএনজি ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার পথে চান্দিনা থানা পুলিশ দু’ ছিনতাইকারীকে সিএনজিসহ আটক করে। ফেনী থেকে চুরি হওয়া সিএনজি চাঁদপুর বালিয়া ইউনিয়নে সিএনজিসহ এক বৃদ্ধকে আটক করেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেছ থেকে (সিলেট-থ ১১-৮০৯৭) সিএনজি স্কুটারটি চালক শামীমকে কচুয়া যাওয়ার নাম করে মলমপার্টির সদস্যরা ভাড়া করে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তাকে নাকে-মুখে মলম লাগিয়ে কচুয়া থানার বাদামতলী এলাকায় রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে সিএনজি স্কুটারটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এসময় ওই এলাকার পাশের বাড়ির জনৈক মহিলা শামীমকে উদ্ধার করে বাড়িতে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। তার পকেটে থাকা মোবাইল নাম্বার পেয়ে তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর মিজিকে ফোন করে ঘটনাটি জানায়। খবর পেয়ে তার ভাই ঘটনাস্থলে গিয়ে শামীমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করে।
জানা যায়, সিএনজিটি চাঁদপুর মডেল থানা থেকে নিলামে ক্রয় করে সাংবাদিক কামরুল ইসলাম। তিনি কন্ট্রাকে ফরিদগঞ্জের মোস্তফা মিজির ছেলে জাহাঙ্গীর মিজিকে চালানোর জন্য দেয়। জাহাঙ্গীর ঘটনার দিন গাড়িটি নিজে না চালিয়ে তার ভাইকে দেয়। ছিনতাইয়ের খবর শুনে গাড়ির মালিক চাঁদপুর মডেল থানার মাধ্যমে সব থানাকে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি অবহিত করে। ঘটনার দিন রাতে চান্দিনা এলাকায় রাস্তার পাশে মলমপার্টির দু’সদস্য সিএনটি টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাদেরকে সিএনজিসহ আটকে রাখে। সে সময় তাদের ৪ জনের মধ্যে ২ জন পালিয়ে যায়। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হলে সিএনজি’র পেছনে থাকা মালিকের নাম্বারটিতে ফোন করে নিশ্চিত হন যে, সিএনজিটি চাঁদপুর থেকে ছিনতাই হয়েছে। খবর পেয়ে চান্দিনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সিএনজিটিসহ ওই দু’জনকে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় সিএনজির মালিক বাদী হয়ে ছিনতাইয়ের মামলা দায়ের করে।
এদিকে ফেনী থেকে গত রোববার রাত ৪টায় বারাইপুর রেলগেট কোম্পানী বাড়ির গ্যারেজ থেকে (ফেনী-১১-৫০০৫), চেসিস নং- গউ২অঅঅঋততঞঠঊ১৫৬২৮, ইঞ্জিন নং- এএফএমবিটিই৫৭৬২৬ নাম্বারের গাড়িটি চুরি হয়। গাড়ির মালিক মমতাজ মিয়ার ছেলে আব্দুল মান্নান (৩০) ফেনী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ফেনী থেকে জনৈক পুলিশ কর্মকর্তা চাঁদপুরের সার্জেন্টকে চুরির ঘটনাটি অবহিত করেন। তিনি পালবাজারের সিএনজি স্ট্যান্ডের জাহাঙ্গীর ও শরীফকে বিষয়টি জানান। শরীফ ও জাহাঙ্গীর গত ২দিন যাবৎ চুরি হওয়া সিএনজিটি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে খুঁজতে থাকে। অবশেষে গত ২ এপ্রিল বুধবার বিকেলে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের গুলিশা গাজী বাড়িতে চুরি হওয়া সিএনজিটির সন্ধান পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানাকে অবহিত করেন। মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার মাহাবুব মোল্লার নেতৃত্বে এসআই কাশেম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাত ২টায় ঐ এলাকায় অভিযান চালিয়ে সিএনজিটি উদ্ধার করে। এসময় মনু মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে আসে।
জানা যায়, মনু মিয়ার মেয়ের জামাই চট্টগ্রাগের বাবু সিএনজিটি চুরি করে এনে শ্বশুর বাড়িতে রাখে। মডেল থানার পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে বৃদ্ধ মনু মিয়ার কাছ থেকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়। সিএনজিটির মালিক দাবি করে ২জন কাগজপত্র নিয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় এসে সিএনজিটি নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঁয়তারা চালায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ যাচাই-বাছাই করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাড়িটি ছেড়ে দিবে বলে জানায়।
শিরোনাম:
রবিবার , ২০ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।