এম আর ইসলাম বাবু ॥
চাঁদপুর লঞ্চঘাট মানছেনা কোন আইন। অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীণ হয়ে পরা চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটটিতে প্রতিদিন যাত্রীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে। গতকাল সড়জমিনে গিয়ে দেখা যায়, লঞ্চঘাট অভিমুখে যেভাবে সিএনজি অটোরিক্সাগুলো রাখা আছে মনে হয় যেন সিএনজি অটো-রিক্সা ষ্ট্যান্ড। যাত্রী ছাউনি লঞ্চ ঘাট থেকে অনেকটা দুরত্বে হওয়ায় যাত্রীরা সময় মতো লঞ্চে উঠতে না পারার ভয়ে পল্টুনে যাওয়ার পথে বসে সময় অতিবাহিত করছে। যাত্রী ভাড়ার চার্ট টানানোর কথা থাকলেও তা টানানো দেখা যায়নি। ট্রলার যোগে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুকি নিয়ে যাত্রীরা লঞ্চে উঠছে। সিএনজি অথবা অটো যোগে লঞ্চ ঘাটে পৌছলে সেখানে প্রতি সিএনজি ও অটো থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। আদায়কারিদের কিসের টাকা উঠানো হগচ্ছে তার এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়নি। তবে এটুকু জানাগেছে যার টাকা উঠানোর কাজে রয়েছে তারা প্রতিবার যে কোন গাড়ী বের হওয়া ও প্রবেশের সময় টাকা উঠালেও তাদেও অধিকাংশকেই আদায় রিসিট দিচ্ছেনা কিন্তু আদায়কৃত টাকা তাদের পকটস্থ করছে বলে অনেক সিএনজি ও অটো রিক্সা চালকরা জানায়। যাত্রীরা লঞ্চঘাট থেকে বের হওয়া মাত্রই পরতে হয় তোপের মুখে একদিকে নিএনজি চালক, অটো চালক, রিক্সা চালকের বেরিকেট, অন্যদিকে কুলি সহ ষ্টেসনের কর্মকর্তাদের খবরদারি। সবমিলিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
খবর নিয়ে জানা যায়, যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নামার সাথে সাথে একটি সংঘবদ্ধ দল যাত্রীদের ব্যাগ ও আসবাবপত্র নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেয়। এদের দিয়ে ব্যাগ ও আসবাবপত্র বহন করলেও তাদেরকে চাঁদা দিতে হয়। এমনকি নিজেরা বহন করলেও যাত্রীদেরকে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণ পর্যন্ত টাকা দিতে হয়। চাঁদপুর থেকে হাইমচর যাওয়ার জন্য মাত্র দু‘ একটি লঞ্চ বরাদ্ধ থাকলেও সেখানেও রয়েছে প্রতিবন্ধকতা। বেশির ভাগ সময়েই পাওয়া যাচ্ছেনা লঞ্চ। তাই চাঁদপুরের মেঘনা মোহনার প্রবল ঘূর্ণবাত উপেক্ষা করেও যাত্রীরা ট্রলার যোগে হাইমচরের দিকে ছুটে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অ-সাধু ট্রলার ব্যাবসায়িরা মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ট্রলারে উঠাচ্ছে। যেসব যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নামছে তাদের অনেকে
ক্ষোভের সাথে বলেন, মনে হচ্ছে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে কোন নিয়ম কানুন নেই। সাধারণ যাত্রীদের হাতের ব্যাগ বহন করলেও এদেরকে চাঁদা না দিলে যাত্রীদের হয়রানি, গালমন্দ এমনকি তাদের হাতে যাত্রীদেরকে লাঞ্চিতও হতে হয়।
চাঁদপুরের অস্থায়ী নৌ-টার্মিনালের পুরো এরিয়া ঘুরে টার্মিনাল দিয়ে বহনকরা পণ্যের উপর ট্যাক্স বা ইজারা আদায়ের কোনো নির্দিষ্ট চার্ট পাওয়া যায়নি।
লঞ্চ মালিক সমিতির প্রতিনিধি রুহুল আমিন হাওলাদারের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, যাত্রীদেও সুবিধার্তে আমরা প্রশাসনের সাথে অচিরেই বসবো। আমরা চাই সু-শৃঙ্খল ভাবে যাত্রীরা লঞ্চে যাতায়াত করুক। এছাড়াও প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪৫ থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকার লঞ্চ রয়েছে। অপরদিকে রাত ১১ টা থেকে সারে ১২ টা পর্যন্ত ঢাকার লঞ্চ পাওয়া যাবে। নারায়নগঞ্জ এর লঞ্চ প্রতিনি সকাল সারে ৫ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত মোট ১৫ টি লঞ্চ যাত্রী সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। এসব লঞ্চগুলো প্রতি ঘন্টা পর পর ছেড়ে যায। থেকে
তিনি যাত্রী হয়রানির কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, আমরা যাত্রীদের হয়রানি করিনা, বরং যাত্রীরাই মালের ট্যাক্সের ব্যাপারে টাকা চাইলে তারা আমাদেরকে দিতে চায় না এবং আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে।
এ ব্যাপারে পোর্ট অফিসার মোবারক হোসেনের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, আসলে আমার জানামতে যাত্রী হয়রানি হচ্ছেনা। তবে বেশ ক’দিন আগে ঢাকা থেকে আগত ক’জন সাংবাদিকের সাথে একটু সমস্যা হয়েছিলো। আমি সেখানে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।
যাত্রী হয়রানির বিষয়ে এ প্রতিবেদক কিছু তথ্য জানালে তিনি বলেন, যদি এমনটা সত্যিই হয়ে থাকে তাহলে যাত্রীরা আমাদের কাছে অথবা সেখানে কর্তব্যরত পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। সব মিলিয়ে যাত্রীদেও এসব হয়রানিস থেকে মুক্তির পথ বের করতে উর্ধতন কতৃপক্ষের নজরদারি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন সচেতন মহল।
শিরোনাম:
বুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।