আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে শুল্ক ও কর আরোপের প্রস্তাবনা আসতে পারে। পাশাপাশি জনস্বার্থে কিংবা দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় থাকবে শুল্ক ও ভ্যাট ছাড়। এসব কারণে অনেক পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও কমতে পারে। সবার চোখও দামের ক্ষেত্রে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
যেসব পণ্যের দাম বাড়বে
তামাকজাত পণ্য : সিগারেটের নিম্ন স্তরের ১০ শলাকার দাম ৩৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম বাড়তে পারে।
বিলাসবহুল গাড়ি, রিকন্ডিশন্ড ও হাইব্রিড গাড়িতে ২০০০ সিসি থেকে ৪০০০ সিসিতে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসবেরও দাম বাড়বে।
রেলের টিকিট : শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত/তাপানুকূল সার্ভিসের পাশাপাশি প্রথম শ্রেণির রেলওয়ে সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে টিকিটের দাম বাড়বে।
এ ছাড়াও আমদানীকৃত পনির, দই, এসি, মোবাইল, পেপার কাপলেট, জিআই ফিটিং, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, গাড়ির সিলিন্ডার, লাইটার, কম্পিউটার প্রিন্টারের টোনার, মেডিটেশন সেবার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, আমদানীকৃত ইলেকট্রনিক কেবল, সব ধরনের পাইপ, আমদানীকৃত মোটরসাইকেল, সব ধরনের রাবার জাতীয় পণ্য, আমদানীকৃত সোলার প্যানেল, অপটিক্যাল ফাইবার কেবল, আমদানীকৃত চেয়ার, প্রিন্টিং কালি, আমদানীকৃত বিলাসবহুল পাখি, কিট-মাস্কসহ সব ধরনের কভিড-১৯ সরঞ্জাম ইত্যাদি।
‘কভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার কথা বলা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে চার লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ তিন লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এনবিআরবহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ২৭১ কোটি টাকা।