এম আর ইসলাম বাবু : সারাবাংলাদেশের ন্যায় রামগঞ্জে হরতাল-অবরোধ চলাকালে ভোটকেন্দ্র গুলোতে প্রশাসনের নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আতংক ও নিষ্প্রান ভোট উৎসবে আংশিক ভোটাররা কেন্দ্রগুলোতে ভোট প্রদান করতে গিয়েছেন। এর মধ্যে ফরিদগঞ্জ বর্ডার বাজার সংলগ্ন রামগঞ্জ মাছিমপুর ভোটকেন্দ্রে নাশকতা করতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াতশিবিরের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে ফরিদগঞ্জের শিবির কর্মী শাহাদাত হোসেন নিহত হয়েছে। এসময় ফরিদগঞ্জের ৩ জন গুলিবিদ্ধ সহ রামগঞ্জের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ফরিদগঞ্জের জামায়াত শিবিরের কর্মীরা পুলিশের গুলিতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। গতকাল রবিবার দুপুর ১২ টায় ফরিদগঞ্জ বর্ডার বাজার সংলগ্ন রামগঞ্জের মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফরিদগঞ্জ ১৬ নং রূপসা দক্ষিন ইউনিয়নের চর মান্দারিয়া বর্ডার বাজারের মৃত বশির উল্লাহ মেম্বারের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন রুবেল (১৯) তার ৩ বন্ধুকে নিয়ে সকাল ১০ টায় পাশবর্তী রামগঞ্জ জেলার স্থানিয় বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের কর্মীদের সাথে নিয়ে মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে নাশকতা সৃষ্টি করতে যায়। এসময় মাছিমপুর উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের সাথে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতেকরে পুলিশের গুলিতে ফরিদগঞ্জের শিবির কর্মী শাহাদাৎ হোসেন ও তার ৩ বন্ধু গুলিবিদ্ধ হয়। মুমুর্ষ অবস্থায় স্থানীয়রা শাহাদাৎ হোসেন রুবেলকে উদ্ধার করে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মোস্তফা খালেদ গুলিবিদ্ধ রুবেলকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করে। রায়পুর থেকে এম্বুল্যান্স যোগে ঢাকা নেওয়ার পথে সে মারা যায়। তার সংগে থাকা বড় ভাই রতন তাকে ফরিদগঞ্জ ১৬ নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চর মান্দারিয়া বর্ডার বাজার সংলগ্ন তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। ঐ এলাকায় জামায়াত শিবিরের নেতারা ও ১৬ নং রূপসা দক্ষিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেনের নির্দেশে পূণরায় তার মরদেহ একই এম্বুল্যান্সে করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। ফরিদগঞ্জের জামায়াত শিবিরের নেতারা পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত হয়েছে বলে তারা গুজব ছড়িয়ে দেয়। রামগঞ্জের মামলা থেকে বাঁচার জন্য লাশটি চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত করে বাড়িতে নিয়ে লাশ দাফন করার জন্য এ পরিকল্পনা করে। ২ জন না একজনের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে সংবাদকর্মী ও স্থানীয়দের মাঝে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়। কারন পথিমধ্যে রুবেলের মৃত্যু হওয়ার পর এম্বুল্যান্সের চালক ফারুক ফরিদগঞ্জ বাজারে আনার পর উপস্থিত সংবাদ কর্মীরা এম্বুল্যান্সের ভিতর থেকে ভিডিও ও ছবি তোলার পর তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। তার সংগে আসা তার বড় ভাই রতন জানায়, ৬ ভাই ১ বোনের মধ্যে শাহাদাৎ হোসেন রুবেল সবার ছোট। সে এ বছর রায়পুর আলিয়া মাদ্রাসার দাখিল পরিক্ষার্থী এবং সে একজন হাফেজে কুরআন। ঘটনার দিন সকালে তাকে মোবাইলে টাকা লোড করার জন্য ৫০ টাকা দিয়ে বাজারে পাঠায়। কিন্তু শাহাদাৎ হোসেন তার ৩ বন্ধুকে সাথে নিয়ে বর্ডার বাজার সংলগ্ন রামগঞ্জের মাছিমপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র দেখতে যায়। সেখানে পুলিশের গুলিতে সে মারা যায়। রায়পুর হাসপাতালের কর্তব্যরত মোস্তফা খালেদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সে জানায় গুলিবিদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন কে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তার মাথায় গুলি লেগে আংশিক মগজ বেরে হয়ে যায়। দ্রুত তাকে ঢাকায় রেফার করলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।