প্রতিনিধি
হাজীগঞ্জে একটি ব্যাংকের প্রায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অসুস্থ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই ব্যাংকের সহকারী ম্যানেজার (সেকেন্ড অফিসার) মোশারফ হোসেনকে হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যান। অসুস্থ আরো ৭ কর্মকর্তা ও কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ৩ কালচোঁ ইউনিয়নের রামপুর বাজারের রূপালী ব্যাংক শাখায়। অসুস্থরা হলেন ঃ ব্যাংকের ম্যানেজার লুৎফর রহমান (৪৫), ক্যাশিয়ার জামাল হোসেন (৩০), কর্মকর্তা আঃ মান্নান (৫০), আঃ রহিম (৩০), সফিক (৫০), দারোয়ান ইউছুফ (৪২) এবং রামপুর বাজারের ব্যবসায়ী আঃ কাদের (৪৫)। নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা মোশারফের বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে। এ ঘটনার সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্ধার করতে গিয়ে একই বাজারের আরো ক�জন ব্যবসায়ীকে ঐ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
হাসপাতালে অসুস্থ রোগী ও রামপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এদিন আছরের নামাজের পরে হঠাৎ করে ব্যাংকের সহকারী ম্যানেজার (সেকেন্ড অফিসার) মোশারফ হোসেন বমি করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এর কয়েক মিনিট পরে একইভাবে আরো ক�জন ব্যাংক স্টাফ মাথা ঘুরানো ও বমি করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন ব্যাংকের অন্য স্টাফরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চান। এ সময় বাজারের ক�জন ব্যবসায়ী অসুস্থদের উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও মাথা ঘুরানো ও বমি শুরু হয়। এরপরই জ্ঞান হারানোদের উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ বাজারের বিসমিল্লাহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ঐ হাসপাতালের চিকিৎসক সেকেন্ড অফিসার মোশারফ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের চিকিৎসা দেয়া হয়। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ঠিক কি কারণে বা কেনো ব্যাংকের সকল স্টাফ আক্রান্ত হলেন এবং ১জন কর্মকর্তা মারা গেলেন তার সঠিক কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আজ (গতকাল) ব্যাংকে একটানা ৫-৬ ঘণ্টা জেনারেটর চলছিলো। তখন শীতের কারণে রুমের দরজা-জানালা বন্ধ ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, বদ্ধ রুমে জেনারেটরের গ্যাসে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
রামপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম মানিক জানান, বাজার থেকে ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসে দেখি এ অবস্থা। পরে সকলকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এ ঘটনায় ব্যাংকের নিচের মার্কেটের অনেক দোকানদার অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ডাঃ নাজমুল হক এ বিষয়ে বলেন, রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। এটি একটি মনোরোগ। একজনের দেখে আরেকজন ভীত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম জানান, আমি খবর পেয়েছি, প্রাথমিকভাবে জেনেছি ব্যাংক স্টাফ সবাই ম্যাচের খাবার খায়। এদিনও তারা খাবারের পর হতে সমস্যা শুরু হতে আরম্ভ করে। এখনি আমরা হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি এবং খোঁজ খবর নিয়ে আপনাদের জানাচ্ছি।
অপরদিকে এ ঘটনায় রাতেই কুমিল্লা থেকে রূপালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।