চাঁদপুর : চাঁদপুর-লাকসাম ৫২ কিলোমিটার রেলপথের নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে অবৈধভাবে ড্রেজিং পাইপ নেওয়া হচ্ছে।
রেলসড়ক কেটে ড্রেজার মেশিনের প্রায় অর্ধশতাধিক পাইপ ঢুকিয়ে ড্রেজিং পাইপ নেওয়ায় রেলপথটি ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। খোদ রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চার/পাঁচশ’ ফুটের ব্যবধানে রেলপথ সুরঙ্গ করে ড্রেজারের পাইপ নেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গা দিয়ে পাইপগুলো ঢোকানো হয়েছে ওইসব এলাকায় চলতি বর্ষাতেই আকস্মিক দেবে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা বড় বড় ড্রেজার মেশিনের পাইপ ঢুকিয়ে ডাকাতিয়া নদী এবং বিভিন্ন খাল থেকে মাটি কেটে তা রেলপথের একপাশ থেকে আরেক পাশে ড্রেজিং লাইনের মাধ্যমে সরিয়ে নিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, অনেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের পরিচয়েও কাজগুলো অবাধে করে যাচ্ছে। চাঁদপুর- লাকসাম রেলপথের মৈশাদী, শাহতলী, মধুরোড, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তিসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব পাইপ দৃশ্যমান।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এ অপকর্মের সাথে প্রভাবশালী মহলের পাশাপাশি রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রেল পুলিশ জড়িত রয়েছে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, ‘‘এটি বড় বিপজ্জনক। আমরা এ যাবত ১৩টি স্থানে ড্রেজার পাইপ বিচ্ছিন্ন করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্যে রেল থানাকে অবহিত করেছি।’’
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল্লা জানান, ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে তাদেরকে মেমো ধরিয়ে দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও নিয়মানুযায়ী এজহার দায়ের না করায় তারা অ্যাকশনে যেতে পারছেন না।
তবে রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার ওসির বক্তব্য অস্বীকার করে বলেন, ‘‘অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত রেলথানাকে মামলা করতে বলেছি। কিন্তু তারা মামলা করেনি, বিষয়টি আমরা জানতাম না।’’
রেলওয়ের পরিচালক (প্রশাসন) ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘‘জিআরপি থানা আর প্রকৌশল বিভাগ নানা টালবাহানা কথা বলে পার পেতে পারে না। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জিআরপি থানাই যথেষ্ট। তারা যদি না পারে তাহলে বেঙ্গল থানার সাহায্য নেব।’’