প্রতিনিধি=
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে পর পর দুটি ট্রেন দুর্ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছে রেলের কর্তাব্যক্তিরা। বড় ধরনের নাশকতা ঠেকাতে ইতিমধ্যে এ রেলপথে পুলিশ, গ্রাম পুলিশ, আনসার ও রেলে কর্মরত রেল মিস্ত্রির পাহারা বসানো হয়েছে। আর এ পাহারায়ই উক্ত রূটে রেলপথে গাড়ি চলাচল করছে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিটি রেল গাড়িকে বাড়তি একটি ইঞ্জিন দিয়ে লাইন পরীক্ষা করে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। ওই বাড়তি ইঞ্জিনটি লাইন পরীক্ষা করে গাড়ি চলাচলের গ্রীন সিগনাল দিয়ে থাকে। এতে করে অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে ট্রেন চলাচলের সিডিউল পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। আর সিডিউল ভেঙ্গে পড়ায় এবং দুর্ঘটনায় আশঙ্কায় এ সড়কে রেল যাত্রী অনেকাংশে কমে গেছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। ১৮ দলীয় জোটের ডাকা গত কটি অবরোধে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে ঘটে নাশকতার ঘটনা। এর মধ্যে শাহরাস্তিতে রেলের ফিশপ্লেট খুলে ফেলা ও শাহতলীতে রেল লাইনের অংশবিশেষ উঠিয়ে ফেলা এবং চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে এ সড়কের একমাত্র আন্তঃনগর ট্রেন মেঘনার চালককে মাথা ফাটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এছাড়া সীতাকুণ্ডের ঘটনার সময় মেঘনার সিডিউল পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ে। সার্বিক এ সকল কারণে এ সড়কের যাত্রীরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। ফলে এ সকল যাত্রী ট্রেনে যাতায়াত একেবারে কমিয়ে দেয়। রেলের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস (চট্টগ্রাম-চাঁদপুর) ও লোকাল ট্রেন সাগরিকা (চাঁদপুর-লাকসাম) চলাচল করছে। গত কদিনের অবরোধ ও দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এ সড়কে পর পর কটি নাশকতা ঘটলেও বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে হাজার হাজার যাত্রী রক্ষা পায়। ঐ সকল দুর্ঘটনার পর থেকে রেল কর্তৃপক্ষ রেলে নাশকতা রোধকল্পে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এ সকল ব্যবস্থার মধ্যে প্রথমত রেলগাড়ি চালানোর সময় সামনে একটি খালি ইঞ্জিন চালিয়ে লাইন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া রেল পুলিশের পাশাপশি রেল সড়ক যে সকল এলাকার উপর দিয়ে গেছে ঐ সকল এলাকার গ্রাম পুলিশ দিয়ে দিনে-রাতে পাহারার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আবার রেলের মিস্ত্রি ও রেল আনসারগণও রেল সড়কে পাহারা দিয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের বড় একটি স্টেশন হাজীগঞ্জ। গতকাল বুধবার দুপুরে এ স্টেশনের মাস্টার আঃ মান্নানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় মেঘনা ট্রেন হাজীগঞ্জে পৌঁছার পরিবর্তে তা আজ (গতকাল) বুধবার সকাল ৭টায় পৌঁছে। একই ট্রেন বুধবার ভোর ৫টায় চাঁদপুর ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় ১০টার পর তা চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে হাজীগঞ্জ ছাড়ে। সিডিউলের এই বিপর্যয় মেইল ট্রেন সাগরিকার ক্ষেত্রেও। চাঁদপুর রেল পুলিশের এসআই সুভাষের সাথে মুঠোফোনে গতকাল যোগাযোগ করলে তিনি জানান, চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করার স্বার্থে রেলওয়ের ১০৮জন পুলিশ কাজ করছে। আরেক প্রশ্নে তিনি জানান, কবে নাগাদ এ প্রহরা প্রত্যাহার করা হবে তা এ সময় বলা যাচ্ছে না। চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের একটি অংশ হাজীগঞ্জের বাকিলা এলাকার উপর দিয়ে চলে গেছে। এ অংশে গতকাল বুধবার সরজমিনে দেখা যায়, বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার আবুল হোসেন ও উশন চন্দ্র দাশ ডিউটি করছেন। তারা জানান, আমরা আমাদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে রেল সড়কে পাহারা দিয়ে যাচ্ছি। বাকিলা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, সরকারি সম্পদ ও মানুষের জানমাল রক্ষার্থে আমি দিনে ২জন ও রাতে ৪জন চকিদার দিয়ে আমার ইউনিয়নের উপর নিয়ে যাওয়া রেল সড়ক অংশে পাহারার ব্যবস্থা করেছি। গত কদিন ধরেই আমার লোকেরা এ কাজ করে যাচ্ছে।