ঢাকা: তীব্র সমালোচনার মুখে ইসলামী ব্যাংকের টাকা ফেরত দেয়ার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও স্বাধীনতা দিবসের উপহার প্যাকেটে ছিল ইবনে সিনার ওষুধ ও স্যালাইন। ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পরিচালিত একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান।
বুধবার সকালে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ আয়োজন হিসেবে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের। এতে সমবেত হন কয়েক লাখ মানুষ।
স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে এমন উপহারে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে জনমনে। বিশেষ করে যারা না বুঝে ওই স্যালাইন বা ওষুধ খেয়েছেন তাদের তো আর নিজের চুল নিজে ছেঁড়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
বিশ্বরেকর্ড করার এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা নানা বয়সী কয়েক লাখ মানুষ, যাদের হাতে অনুষ্ঠানের শুরুতেই তুলে দেয়া হয় একটি করে উপহার ব্যাগ। ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ লেখা ব্যাগের ভেতরে থাকা উপহারগুলোর মধ্যে ছিল একটি খাবারের প্যাকেট। যা খুলতেই বেরিয়ে আসে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পরিচালিত ইবনে সিনার বেশ কিছু ওষুধ। যার মধ্যে ছিল একটি স্যালাইন, একটি গ্যাসট্রিকের ওষুধ ও একটি সিনাপল ট্যাবলেট।
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এমন সব উপহার দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বেশ কিছু তরুণকে। তাদের কাছে গিয়ে ক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে জায়েদ নামের একজন তরুণ জানায়, যেখানে জামায়াতের সব অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কথা, সেখানে উল্টো সরকারই তাদের পণ্য জনগণের হাতে তুলে দিচ্ছে।
তারই পাশে দাঁড়ানো ষাটোর্ধ্ব আকরাম হোসেনও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আজ সরকার ডেকে এনে জামায়াতের কলঙ্ক উপহার দিয়েছে। বুঝলাম না এটা কি ঠাট্টা, নাকি উপহাস! সরকারের যদি জামায়াতের প্রতিষ্ঠানের ওপর এতোই টান, তাহলে কেন শুধু শুধু আমদের নিষেধ করা হয় জামায়াতের সঙ্গে যেতে। আবার নিষেধ যদিবা করবেন তাহলে আবার কেন তাদের উপহার স্বাধীনতা দিবসে আমাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।’
এমন প্রশ্ন শুধু জায়েদ বা আকরাম হোসেনের মাথাতেই নয়, ঘুরছে স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সবার মনেই।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলায় ইসলামী ব্যাংক বা এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ অনুদান না নেয়ার ঘোষণা দেন।