মিজান লিটন
শরীয়তপুর ফেরি ঘাটের পন্টুনের র্যাম ভেঙ্গে যাওয়ায় চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ-রূটে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে দু’ পাড়ে যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ির লম্বা লাইন হয়ে আছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।
ঘাট সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার ভোর ৫টায় শরীয়তপুর ঘাট থেকে ফেরি কস্তুরীতে গাড়ি লোড নেয়ার সময় হঠাৎ পন্টুন সংযোগ র্যাম ভেঙ্গে গেলে ফেরিতে গাড়ি উঠানো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ-রুটের ফেরি চলাচল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পন্টুন র্যাম মেরামত কাজ চলমান রয়েছে বলে বিআইডাব্লিউটিসির (বাণিজ্য) ফেরি ঘাট ব্যবস্থাপক ইমরান খান জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, খবর পেয়ে বিষয়টি বিআইডাব্লিউটিএর সিপিএসকে জানালে সকাল ১১টায় র্যাম মেরামত করার জন্য সেখানে সিপিএস রহিমসহ একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মেরামত কাজ শুরু করেন। সারাদিনে র্যাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা সম্ভব হয়নি। তবে রাত ১০টার মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হবে বলে ঐ কর্মকর্তা জানান। র্যামটি ঠিক হলে ফেরি চলাচল পুনরায় চালু হবে। এদিকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী পরিবহনের ২০/২৫টি গাড়িসহ ২ শতাধিক যানবাহন চাঁদপুর, হরিণা ও শরীয়তপুর ঘাটে আটকা পড়েছে। এই গাড়ির সংখ্যা আরো বেড়ে দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। সারাদিন ফেরি চলাচল না করায় আটকা পড়া যানবাহনের যাত্রী সাধারণ ও গাড়ি চালক এবং হেলপার সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। কখন ফেরি চলাচল শুরু করবে সে প্রতীক্ষায় রয়েছেন তারা।
ফেরির এ রূটটি চালু হবার পর থেকে নানা সমস্যায় এই পথে আসা মানুষদের বহু দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ইজারাদারদের দৌরাত্ম্যের কারণে এমনিতেই ১/২দিন ফেরির জন্য গাড়ি নিয়ে ঘাটে পড়ে থাকতে হয়। গাড়ির সিরিয়াল পেতে ঘাট ইজারাদারদের আলাদাভাবে টাকা না দিলে ফেরিতে উঠা যায় না। নদী ভাঙ্গন, চলন্ত অবস্থায় ফেরি বিকল হওয়া, পন্টুন, র্যাম, গ্যাংওয়ে সমস্যা এবং ফেরি সঙ্কট এখন নিত্যদিনের সসস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সাথে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দরের পণ্য আনা নেয়া এবং যাত্রী পরিবহনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে চাঁদপুর ও শরীয়তপুর ফেরি রূটের গুরুত্ব অনেক। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং স্থানীয়ভাবে অব্যবস্থাপনার দরুন এই ফেরি সার্ভিস মানুষের অনেক কষ্ট ও যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি নেই এখানে। একটি সূত্র জানায়, বছরে ফেরিঘাটের দু পাড়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়ে আসছে। ফেরি চলাচল সহজতর করা হয়নি। যারা এ পথে একবার আসে পরবর্তীতে দুর্ভোগের শিক্ষা নিয়ে এবং অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেবার কষ্ট মনে পড়লে আর আসতে চায় না। বিকল্প পথ অনেক ব্যয়বহুল এবং সময় সাপেক্ষ। তাই অনেকটাই বাধ্য হয়েই এই রুটে গাড়ি নিয়ে এসে জিম্মি হয়ে পড়তে হয়।