মুফতী : মুহা: আবু বকর বিন ফারুক
বছর মাস, সপ্তাহ, দিন মহান আল্লাহ তা’য়ালার দান। বছর, মাস, সপ্তাহ, দিন যেকোন সময় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে ডাকলে মহান আল্লাহ তা’য়ালা ডাক শুনেন ও দেখেন । যেকোন সময়ই তাঁর ইবাদত করা যায়।
তদুপরিও মহান আল্লাহ তা’য়ালা কিছু কিছু সময়কে আরো মর্যাদাবান করেছেন। যেমন মর্যাদাবান করেছেন রমজান মাসকে অন্যান্য মাসের মধ্যে।তেমনি রমজান মাসে রোযা ফরয করা হয়েছে। এছাড়া নফল রোযা রাখা যায়।
তেমনিই মর্যাদাবান রোযা শাওয়াল মাসের ৬ রোযা। রমজান মাসে এক মাস রোযা রাখার দ্বারা বান্দা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারে। নফল নামাজ, রোযার দ্বারাও বান্দা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারে।
এ জন্য রমজানের রোযার পর শাওয়ালের রোযা রাখা একান্ত প্রয়োজন।রমজানের রোযা রাখার পর শাওয়ালের ৬ রোযা রাখার দ্বারা পুরো বছর রোযা রাখার ছাওয়াব অর্জিত হয়।
হযরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস নম্বর ৮২২)।
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসগণ বলেন, রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে কোরআনুল কারিমে। সূরা আনআমের ১৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি একটি সৎ কাজ করল, সে ১০ গুণ সওয়াব পাবে।’ এ হিসাবে যে ব্যক্তি রমজানের এক মাস রোজা রাখল সে ১০ মাস রোজা রাখার সওয়াব পাবে। আর ছয়টি রোজার ১০ গুণ ৬০ দিন। অর্থাৎ দুই মাস। আর এ দুই মাস মিলে ১২ মাস রোজার সাওয়াব। তাহলে ৩৬টি রোজার ১০ গুণ হলে ৩৬০টি রোজার সমান (এটি পুরস্কারের দিক থেকে)। অর্থাৎ সারা বছর রোজার সমান সওয়াব হবে।
হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।’ (নাসায়ি শরিফ, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা. ১৬২)।
হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখ এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখ, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি শরিফ, খণ্ড, ১ পৃ. ১৫৭)।
সূরা আনআমের ১৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি একটি সৎ কাজ করল, সে ১০ গুণ সাওয়াব পাবে। এ হিসাবে যে ব্যক্তি রমজানের এক মাস রোজা রাখল, সে ১০ মাস রোজা রাখার সাওয়াব পাবে। আর ছয়টি রোজার ১০ গুণ ৬০ দিন। অর্থাৎ দুই মাস। আর এ দুই মাস মিলে ১২ মাস রোজার সাওয়াব। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-
‘অনন্তর কেউ অণু পরিমাণ সৎ কর্ম করলে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।’ (সূরা আল-যিলযাল, আয়াত: ৭-৮)
নেক আমল সামান্য হলেও নেক আমল।আর নেক আমলের ছাওয়াব পাবেই। রমজানে মাসের রোযা শেষ হওয়ার পর হঠাৎ রোযা রাখা ছেড়ে দিলে শরীরের উপর কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। এজন্য ঈদের দিন বাকী সময়গুলোতে শাওয়ালের রোযা রাখার দ্বারা শাওয়াল মাসেও রোযা রাখারমত আমল করা হয়।
আমরা সকলে শাওয়ালের রোযা রাখার অভ্যস্থ হই।
লেখক : মুফতী মুহা : আবু বকর বিন ফারুক
ই- মেইল –mdabubakarbinfaruque@gmail.com