দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। দিন দিন বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত রোগী। ইতিমধ্যে
শাহরাস্তি উপজেলায় চারজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। উপজেলার হাসপাতাল ও
ঠাকুরবাজার এলাকায় করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনসাধারণ স্বাস্থ্য ঝুঁকির
মধ্যে রয়েছে। তারপরও থেমে নেই মানুষের অবাধ বিচরণ। করোনা আতঙ্কের মাঝেও
শাহরাস্তি উপজেলার প্রধান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঈদের কেনা-কাটা জমে
উঠেছে। মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই
চলছে অবাধে বেচা-কেনা। মার্কেটগুলোতে পুরুষের তুলনায় নারীর উপস্থিতি অনেক
বেশি। মহিলারা কোলে ও হাতে শিশুদের নিয়ে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ঘুরে
বেড়াচ্ছেন। তাদের কেনা-কাটা দেখলে বোঝাই যায় না যে, বিশ্বজুড়ে এক মহামারী
গ্রাস করে নিয়েছে মানবজাতিকে।
শাহরাস্তি উপজেলার প্রধান বাজারগুলোর মধ্যে অনেক দোকানই খোলা রয়েছে। এছাড়া
প্রধান মার্কেটগুলো গেট লাগিয়ে ভেতরে ব্যবসা করে যাচ্ছে। কোনো দোকানেই
স্বাস্থ্যসম্মত বিধি মানা হচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব কাকে বলে অনেকেই তা
জানেন না। সবার সাথে তাল মিলিয়ে সব দোকান খোলা রাখার প্রতিযোগিতায়
ব্যবসায়ীরা মেতে উঠেছে। জামা-কাপড়ের দোকান ছাড়াও জুতা, হার্ডওয়্যার,
ওয়ার্কশপ, মিষ্টির দোকান, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বেশির ভাগ দোকানই খোলা দেখা
যায়।
অনেক বাজারের দোকানগুলো অর্ধেক সার্টার খোলা রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অনেক ব্যবসায়ীকে চোর-পুলিশ খেলতে দেখা গেছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে
দোকান বন্ধ করে ভেতরে বসে থাকতে দেখা গেছে, আবার পুলিশ চলে গেলে সার্টার
খুলে মনের আয়েশে ব্যবসা করতে দেখা যায়। সরকার কর্তৃক যানচলাচলের বিধিনিষিধ
আরোপের পর থেকে কিছুটা যান চলাচল কম থাকলেও বর্তমানে তা অনেক হারে বেড়ে
গেছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মাটি বহনকরা হাইড্রোলিক
ট্রাকসহ জনসাধারণের অবাধ যাতায়াত লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি, বেসরকারি ও
ব্যক্তিপর্যায়ে ত্রাণ সহযোগিতা দেয়ার পরও মানুষকে ঘরমুখী করা যাচ্ছে না।
শাহরাস্তির বাজারগুলোতে মানুষের সমাগম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত কয়েক
দিন থেকে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে মেহার
কালীবাড়িতে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের শাখায় সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
কোনো প্রকার সামাজিক দূরত্ব বাজায় না রেখেই জীবনের ঝুঁকি দিয়ে লেনদেন করতে
আসেন গ্রাহকরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে জনসাধারণের অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে
কোথাও কোনো তদারকি লক্ষ্য করা যায়নি। উপজেলা প্রশাসনের তদারকি তেমন চোখে না
পড়লেও থানা পুুলিশের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। করোনা মোকাবিলায়
শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচর্জ শাহআলম উপজেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক
প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। উপজেলাবাসীর কাছে তিনি দিন দিন আস্থার প্রতীক হয়ে
উঠছেন।
মেহার কালিবাড়ী বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ
কামরুজ্জামান পাটওয়ারী জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মতো জেলাজুড়ে লকডাউন
চলছে। এতে বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু অনেক ব্যবসায়ী
নির্দেশ অমান্য করে দোকান খোলা রেখেছে। এর দায়-দায়িত্ব তাদের বহন করতে হবে।
আমরা বলে দিয়েছি, এর দায়ভার আমরা নিবো না।