বছর বছর ফসলী জমির মাটি বিক্রি করে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্টসহ রাস্তা ঘাট, পুল কালভার্ট, পরিবেশ দূষণ করছে মাটি ক্রেতা বিক্রেতা ও যন্ত্রদানব ট্রাক্টর । আইনগত বাধা নিষেধ থাকলেও কোনো তোয়ক্কা করছেনা কেউই। ফসলী জমি নষ্ট করা , রাস্তাঘাট, পুল কালভার্ট ধংস করা, পরিবেশ দূষন করা, কালো রাস্তায় ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলের উপর স্ব স্ব দপ্তরে আইনগত বিধি বিধান থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন গুলো মসৃণ কাঁথায় মুড়ে রেখেছে প্রয়োগ প্রথা। যে কারনে আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই। সে সুবাদে প্রতিটি স্থানেই দৌরাত্বতা প্রতীয়মান।এমন বক্তব্য গুলো ক্ষতিগ্রস্ত মহলের ।
শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের নালিয়া পাড়া মাঠে প্রতি বছরই মাটি বিক্রি করে আসছে জমির মালিকগন। মাটি বিক্রির কারণে তিন ব্যক্তি হচ্ছেন লাভবান। যিনি জমির মাটি বিক্রি করেন তিনি পাচ্ছেন টাকা, যিনি মাটি ক্রয় করেন তিনি ব্রিকফিল্ডের মালিকের সাথে ব্যবসা করে হচ্ছেন লাভবান আর ব্রিকফিল্ডের মালিক ওই মাটি দ্বারা ইট তৈরি করে বিক্রির মাধ্যমে হচ্ছেন লাভবান। অথচ মাটি ক্রয়ের জায়গা থেকে বিক্রয়ের জায়গা পর্যন্ত মাঝখানের ২/৩ কিলোমিটার জায়গার ক্ষয়Ñক্ষতির ভাগিদার হচ্ছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সাধারণ জনগন ও পথচারীরা ।
বালি, মাটি ও ইট বহনকারী যন্ত্রদানব ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতির ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগামী শিক্ষার্থীরাও পাচ্ছেনা রেহাই। মাটির ক্রেতা রাস্তার পাড় কেটে মাঠ থেকে মাটি ভরাট ট্রাক্টর রাস্তায় তুলতে দেখা যায়। যা এক সময় ব্যবহার হতে হতে রাস্তার পাড়সহ রাস্তাটি ভেঙ্গে যাতায়াতে অযোগ্য হয়ে পড়ে। ওই রাস্তা দিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রায়ই যাতায়াত করলেও তাদের চোখ যেন বাঁধা থাকে কালো কাপড়ে । যে কারনে তারা দেখলেও দেখতে পাননা কিছু বাধা রয়েছে বলেÑএমন মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার একটি পৌরসভা ও দশটি ইউনিয়নের প্রধান সড়কগুলো বালি,মাটি,ইট বহনকারী ট্রাক্টর দ্বারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত । কেউ যেন দেখার নেই কেউ যেন বলার নেই।অথচ ট্রাক্টর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা গুলোতে চলাচলের সময় পথচারীরা স্থানীয় এমপি, পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানদের গালমন্দ করেন। কিন্তু ট্রাক্টর চালক, ট্রাক্টর মালিক, মাটি ব্যবসায়ী ও ইট ভাটার মালিকদের কেউই গাল দিচ্ছেন না। উপজেলার অভ্যন্তরে সিএন্ডবি,এলজিইডি ও কেয়ারের রাস্তাগুলো এরই মধ্যে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যেখানে সেখানে বড় বড় গর্ত ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে প্রতিটি যানবাহনকে। নিরাপদে নেই যাত্রী ও পথচারীরা ।
কবে মুক্তি পাবে শাহরাস্তিবাসী ভঙ্গুর রাস্তা ঘাট, ধূলি বালি, পরিবেশ দূষণকারী কালো ধোঁয়া থেকে। শিশু বৃদ্ধ, গাছপালা, রবিশস্য, ফলমূল ও ফসলাদী নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ জনগণ, তার সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এদেশের সরকার। কেননা কৃষক বাঁচলে যদি জাতি বাঁচে তবেই তো বাঁচবে সরকার। তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারীতা ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবুজ শ্যামল বাংলাকে রক্ষা করতে দায়িত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনে আশাবাদী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনগণ।