শওকত আলী॥
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় মাদ্রসার শিক্ষক কর্তৃক ৯ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণীর ধর্ষিত শিশুকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপি এম। ৩ আগস্ট বৃহস্পতিার বিকেলে তিনি চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে গিয়ে ধর্ষিত শিশুর শয্যা পাশে গিয়ে চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন, এবং ঘটনার সম্পর্কে জানেন।
এসময় পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, বর্তমান সময়ে দেখা যায় অভিবাবকরা শিশুদের প্রতি ততটা গুরত্বসহকারে খোঁজ খবর রাখছেন না। দেখা যায়, যাদের ১৫/১৬ বছর মেয়ে রয়েছে তারা তাদের প্রতিই বেশি নজর রাখছেন। শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের গুরত্ব কম থাকায় এসব অপরাধীরা শিশুদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সাথে এসব ঘটনা ঘটাতে সুযোগ পায়। এজন্য প্রত্যেক অভিবাবকদেরকে শিশুদের প্রতি আরো যতœবান ও সচেতন হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ওইদিনই শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি, এবং সেদিনই আমরা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাকে আদালতে সোর্পদ কারার পর সে ধর্ষনের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। তাকে আইনের আওতায় রেখে আমরাও তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে করে ভবিষ্যতে আর কোন লোক এমন ঘটনা না ঘটাতে পারে।
এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়ালী উল্ল্যাহ অলি, শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান, এস আই মোঃ বাছির আলমসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা।
উল্ল্যেখ ঃ গত ৩১ জুলাই সোমবার দুপুরে শাহরাস্তি পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাত্ত্বলা গ্রামের বাত্ত্বলা আলীমুল কোরআন নুরানী মাদ্রাসার অফিস কক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষক ওহিদুজ্জামান (৩০) মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
ওই ছাত্রীর মা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় ওইদিন তার মেয়ে সকাল ৯ টার পূর্বেই মাদ্রাসায় যায়। ঘটনার দিন মাদ্রাসায় আরবী পরীক্ষা ছিল। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পযন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে ওই ছাএী সকল শিক্ষার্থীর সাথে বাড়িতে রওনা হলে মাদ্রাসার হুজুর তাকে মাদ্রাসায় থাকার জন্য বলে। ছাএীটি বেলা ২ টায় মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে যায়। এরপর শিশুটি ভয়ে এ ঘটনা কাউকে জানায়নি। দুপুরের পর সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বড় বোন তার কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পারে।
শিশু মেয়েটির মা বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর শাহরাস্তি থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ওহিদুজ্জামান দীপুকে আটক করে।
অভিযুক্ত ওহিদুজ্জামান দীপু পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। স্থানীয়রা জানান, ওহিদুজ্জামান গত বছর বাও¦লা মিয়াজী বাড়ি জামে মসজিদে মোয়জ্জেম হিসেবে যোগদান করেন । এরপর তিনি বাত্ত্বলা আলীমূল কোরআন নুরানী মাদ্রাসায় শিক্ষকের দায়িত্ব নেয়। মাদ্রাসাটিতে তিনিই একমাএ শিক্ষক। ওহিদুজ্জামান বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলার চর আটজুড়ি গ্রামের বাশার মোল্লার ছেলে। ওহিদুজ্জামান বাত্ত্বলা গ্রমের মিয়াজী বাড়ির হুমায়ূনের ঘরে পরিবার সহকারে বসবাস করে আসছেন। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে চাঁদপুর অদালতে নেয়া হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।