প্রতিনিধি ======
শাহরাস্তিতে যৌতুকের দাবিতে এক সন্তানের জননীকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে পাষণ্ড স্বামী। অবশেষে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে শাহরাসত্দি থানা পুলিশ।
গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানায়, ৩ বছর পূর্বে শাহরাস্তি পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের আবুল কালামের একমাত্র কন্যা জাকিয়া আক্তারের (২১) বিয়ে হয় সূচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের গুলার বাড়ির তাজুল ইসলামের পুত্র মোঃ মাসুদ আলম (২৬)-এর সাথে। বর্তমানে তাদের মেহেদী হাসান (২) নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় বর মাসুদ আলমকে যৌতুক হিসেবে নগদ ১ লাখ টাকা, গলার স্বর্ণের চেইন, হাতের বালা, কানের দুলসহ আনুষঙ্গিক মিলিয়ে সর্বমোট ২ লাখ টাকার মালামালসহ প্রদান করা হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুক লোভী শাশুড়ি মানছুরা, ননদ তাহমিনা, দেবর ইউসুফের ইন্ধনে যৌতুক লোভী স্বামী মাসুদ আলম বিদেশ যাবে মর্মে স্ত্রী জাকিয়া আক্তারকে তার পরিবারের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। স্ত্রী জাকিয়া আক্তারকে যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত চলে পাষণ্ড স্বামী মাসুদ আলমের নির্যাতন। নির্যাতন ও মারধরের বিষয় বেশ ক’বার সালিস হয়েছে। সালিসে আর যৌতুক চাইবে না ও মারধর করবে না বলে স্বামী মাসুদ আলম ৩শ’ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সালিসগণকে অঙ্গীকার প্রদান করে। কিন্তু তাতেও অত্যাচার ও নির্যাতন ক্রমেই বাড়তে থাকলেও স্ত্রী জাকিয়া আক্তার নিরুপায় হয়ে স্বামী মাসুদ আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর আদালতে নারী, শিশু নির্যাতন ও যৌতুক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
গত ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দাবিকৃত যৌতুক ও স্ট্যাম্প ফেরৎ দেয়ার জন্য স্ত্রী জাকিয়া আক্তারকে বেদম মারধর করে স্বামী মাসুদ। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি ও স্ট্যাম্প না দেয়ায় একই দিন রাতে স্ত্রী জাকিয়া আক্তারকে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে গলা টিপে হত্যার চেষ্টাকালে তার শিশু পুত্র মেহেদী হাসান চিৎকার শুরু করলে তার জা সেলিনা (২২) ও দেবর শরীফ (২০) মাসুদ আলমের হাত থেকে জাকিয়া আক্তারকে উদ্ধার করে। বাড়ির লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় জাকিয়া আক্তারকে শাহরাস্তি হাসপাতালে আনতে চাইলেও পাষণ্ড স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে আনতে দেয়নি। খবর শুনে জাকিয়ার পরিবার তাকে হাসপাতালে আনার জন্য মাসুদ আলমের পরিবারের কাছে ফোন দিলে জাকিয়াদের পরিবার যে তাদের বাড়িতে যাবে তাকে আটক করার হুমকি-ধমকি ও গালমন্দ করে। পরের দিন শুক্রবার জাকিয়ার মাতা মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে শাহরাস্তি মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানার এসআই আঃ মান্নান ও সঙ্গীয় ফোর্স গৃহবধূ জাকিয়া আক্তারকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েএনে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি শাহরাস্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।