শাহরাস্তিতে দিনমজুর রফিক হত্যার খুনিদের ফাসিঁ চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় এলাকাবাসি।
৫ জানুয়ারী রবিবার সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শোরসাক বাজার এলাকা এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চেড়িয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, এলাকার সর্বস্তরের জনগন ও নিহতদের পরিবার লোকজন এই মানববন্ধন করেন।
মনববন্ধনে তারা দিনমজুর রফিক হত্যার খুনিদের ফাসিঁ চেয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। মানববন্ধনে পরিবাররা দাবি জানান যারা প্রকৃত খুনি তাদেরকে অতি শিগ্রহি আটক করে আইনের আওতায় এনে ফাসিঁর দাবি জানান। এছাড়া তারা আরো বলেন প্রকৃত খুনিরা এখনও আটক হয়নি। এবং তাদের দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। আমরা এখনও হুমকির মধ্যে জীবন যাপন করছি। আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন। স্থানীয় প্রশাসনের নিকট আবেদন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুনিদের অস্ত্র সহ আটক করে আইনের আওতায় আনা না হলে আরো দূর্ঘটনা আশংক্ষা পোষন করেন।
প্রংগত ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে প্রকাশ্য দিবালোকে নিজ বাড়িতেই খুন করা হলো দিনমজুর রফিকুল ইসলামকে। ৩ জন গুরুতর আহত, পরিবারের সদস্যদের সামনেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এলাকার কিছু বখাটে ও দুর্বৃত্ত যুবক। শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের চেড়িয়ারা গ্রামের ষষ্ঠি বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চেড়িয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষার ফলাফল জানতে স্কুলে যায়। তাদের ক্ষুধা পেলে তারা স্কুলের সামনে সুমনের দোকানে খাবার খেতে যায়। এ সময় চেড়িয়ারা গ্রামের করের বাড়ির রাশেদ আহম্মেদ কালু দোকানে প্রবেশ করে তাদের চেয়ার ছেড়ে দিতে বলে। তখন ওই তিন ছাত্র চেয়ার ছেড়ে অন্য পাশে গিয়ে বসে।
এরপর কালুর ছেলে মুন্না তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়, এক পর্যায়ে কালু তাদের মারধর করে। ছাত্র সাইফুল জানায়, কালু তাদের গলা চাপ দিয়ে ধরে মারধর করে। পরে তার সাথে থাকা বন্ধু এবায়দুল ও রাকিবুলসহ তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের অবহিত করলে তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন, মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদারকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবগ্রের পরামর্শে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনা জানানোর জন্যে বিকেলে রওনা হয়।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায় বিকেল ৪টায় পার্শ্ববর্তী এমরান হোসেনের দোকানের সামনে গেলে নুরুল ইসলামের ছেলে রাশেদ আহমেদ কালু, জামাল হোসেনের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা রেদোয়ান হোসেন সেন্টু, নুরুল ইসলামের ছেলে সাগর, রাশেদের ছেলে রাহুল মজুমদারের , আবুল খায়েরের ছেলে আবুল কালাম আবুল, কালামের ছেলে মোঃ সোহেল, শান্ত সহ ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী একটি দল তাদের উপর হামলা করে।
তখন তারা সেখান থেকে দৌড়ে বাড়িতে চলে আসে। তাদের পেছনে পেছনে হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে এলোপাতাড়ি হামলা করা শুরু করে। এ সময় দিনমজুর রফিকুল ইসলাম মাটি কাটার কাজ শেষে বাড়িতে আসেন। তিনি কোনো কিছু বুঝার আগেই হামলাকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। তার মাথায় ও কপালে একাধিক কোপ লাগে।
মুহূত্রের মধ্যেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই দুর্বৃত্তদের হামলায় আরো বেশ কজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মিজানুর রহমান, মনছুর আহম্মেদ ও মহিউদ্দিন বর্তমানে চিকিৎসাদিন রয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে হাজার হাজার লোক অংশ গ্রহন করেন। এলাকাবাসী অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।