শাহরাস্তি উপজেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। এ উপজেলায় গত ১৮ দিনে ৫২ জনের কোভিড পজেটিভ এসেছে। যাতে গড়ে প্রতিদিন ৩ জন আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৫ জন।
শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান হতে জানা যায়, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত উপজেলায় মোট ২৬১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ওইদিন চাঁদপুরের ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ আরটি-পিসিআর ল্যাব হতে ১২টি নমুনার ফলাফল আসে। ফলাফলে নতুন করে ১ জনের রিপোর্ট পজেটিভ ও ১১ জনের নেগেটিভ আসে। এরপর হতেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে, ৪ এপ্রিল রোববার ২১টি নমুনার ফলাফল আসে। যাতে নতুন করে ৬ জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার ২৩টি নমুনার ফলাফলের বিপরীতে ৬ জনের রিপোর্ট পজেটিভ ও ১৭ জনের নেগেটিভ আসে। ওই রিপোর্টে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের ওয়ারুক বড় বাড়ির আবুল বাশারের স্ত্রী কৈতরের নেছা (৬৫) অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরদিন ৭ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৫ টায় নিজ বাড়িতে মারা যান পৌরসভার নাওড়া গ্রামের পাটোয়ারী মৃতঃ হায়দার আলীর পুত্র আঃ রব পাটোয়ারী (৬৫)। বৃহস্পতিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাহরাস্তি উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৩১৫ জনে। যাতে চলতি মাসেই ২ জন মৃতসহ আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ জন।
চলতি মাসে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন ১ শ’ ৯৯ জন যার মধ্যে আক্রান্তের হার ২৬ শতাংশ। যা পূর্বের সকল পরিসংখ্যান হতে বেশী।
করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ার পেছনে অসচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানাকে মূল কারন উল্লেখ করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নাসির উদ্দিন জানান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম পরিহার ও সন্দেহজনক রোগীদের পরীক্ষা করতে হবে। সবাই সচেতন না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও জানান, সব সময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ও সামাজিক সচেতনতাই বৈশ্বিক এ মহামারি হতে আমাদের মুক্ত করতে পারে।
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, মাস্কের যথাযত ব্যবহার না করা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতার কারণে আক্রান্তের হার বাড়ছে। মানুষ নিজ হতে সচেতন না হলে আইন প্রয়োগ করে এ সংকট হতে উত্তরনের সুযোগ নেই। এজন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি, জনসমাগম পরিহার ও মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস বাড়াতে হবে। কোনভাবেই মাস্ক পরিত্যাগ করা যাবেনা।
প্রসঙ্গত, শাহরাস্তি উপজেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৭ শ’ ৩৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে ৩১৫ জনের করোনা পজেটিভ ও ১ হাজার ৪ শ’ ৪২ জনের নেগেটিভ এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৯ জন মারা গেছেন। সুস্থ্য হয়েছেন ২৬০ জন। হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৪৬ জন।
সংবাদদাতা/চাঁদপুরনিউজ/