শাহরাস্তি – সংবাদদাতা ॥
শাহরাস্তিতে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ধর্ষক সহ ভিকটিমের মা ও সৎ বাবাকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
শাহরাস্তি মডেল থানা পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের উয়ারুক গ্রামের ফকির বাড়ীর মৃত মনু মিয়ার কন্যা ও বাবুরহাট সরকারি শিশু পরিবারের (এতিম খানা) নিবাসী ও বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৩) ধর্ষণ করে কক্সবাজারের সফলনন্দী গ্রামের (মুজাম্মেল বাড়ী) মৃত আলী আহমেদের পুত্র ওমান প্রবাসী এবায়েদুল হক (৩৮) নামের এক লম্পট।
শিক্ষার্থীর পরিবার জানায়, ওমান প্রবাসী এবায়েদুল হকের সাথে শিক্ষার্থীর মা নাজমা বেগমের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সম্পর্কের সুত্রপাত ঘটে। তার জের ধরে এবায়েদুল হকের কাছ থেকে মা নাজমা বেগম মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে। যার প্রেক্ষিতে তার কন্যাকে এবায়েদুল হকের কাছে বিয়ে দিবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। কয়েকদিন পূর্বে এবায়েদুল হক ওমান থেকে দেশে ফিরে আসলে মা নাজমা বেগম বাবুরহাট সরকারি শিশু পরিবার (এতিম খানা) থেকে তার গ্রামের বাড়ী উয়ারুকে নিয়ে আসে। বয়স কম থাকায় লোভী পাষন্ড মা মনোহরগঞ্জ উপজেলার কেশতলা গ্রামের তার দুর্সম্পর্কের আত্মীয় জালালী হুজুরের বাড়ীতে নিয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেখানে গিয়েও তিনি ব্যর্থ হয়ে নিজ গ্রাম উয়ারুক গ্রামে এসে প্রচার করেন যে, এবায়েদুল হকের সাথে তার মেয়ের বিবাহ দেওয়া হয়েছে। উয়ারুক ফকির বাড়ীতে শিশু কন্যা ও লম্পট এবায়েদুল হকের সাথে রাতে একই ঘরে থাকতে দেওয়া হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টায় মেয়েটির আত্মচিৎকারে বাড়ীর ও পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে এসে লম্পট এবায়েদুল হকের হাত থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে শাহরাস্তি মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) দিলদার আজাদ, এস.আই মহিন উদ্দিন ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল থেকে শিশু ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে। এছাড়া লম্পট এবায়েদুল হক, পাষন্ড মা নাজমা বেগম ও সৎ বাবা সুরুজ মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ শিশু ছাত্রীকে উদ্ধারের পর শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে লম্পট ধর্ষক সহ মা ও সৎ বাবাকে আসামী করে শাহরাস্তি মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-১২, তাং-২৩/০১/২০১৬ ইং।
শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) দিলদার আজাদ জানান, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশু শিক্ষার্থীকে উদ্ধার সহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে তাকে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে।