
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, শিশুদের সমস্যা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এর সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি উপস্থিত শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকে যারা এই সংলাপে অংশগ্রহণ করেছে তারা প্রত্যেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী। মেধাবীদের মনে বেশ কিছু পরিকল্পনা থাকে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ করে আমরা যেতে পারি। চাঁদপুর জেলা শিক্ষায় অন্যান্য জেলা থেকে এগিয়ে রয়েছে। আমরা ভালো কিছু করে এগিয়ে যেতে চাই। তিনি আজকের শিশুদের দেশের সম্পদে পরিণত করার উপর জোর দেন। এ সময় শিশুরা ১৪টি তারকা চিহ্নিত সমস্যা সমাধান ও সুপারিশ করে মনোমুগ্ধকর আকর্ষণীয় বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডল ১৪টি বিষয় ভিত্তিক বক্তব্যের উপর আলোচনা এবং বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমার ইচ্ছা হয় আবার শিশু হতে, কোমলমতি শিশুদের মতো আবার হতে চাই। আজ উপস্থিত শিশুদের দেখে আমার শিশুকালের অনেক কথা মনে পড়ে যায়। শত চেষ্টা করলেও সেই অবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। তিনি শিশুদের সমস্যা ও সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, সারা দেশেই শিক্ষাঙ্গনে বেঞ্চ, শ্রেণি কক্ষ ও শিক্ষা উপকরণ সমস্যা রয়েছে। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার হওয়ায় আলোচিত সমস্যাগুলো এখন চিরস্থায়ী সমস্যা নয়। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা এখন জিরো টলারেন্সে আছি। পুলিশ সুপার এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা যাতে মাদকে আসক্ত না হয়। এজন্যে পিতা-মাতার ভূমিকা বেশি। তিনি আরো বলেন, সকল সমস্যা সরকার সমাধান করবে তা কিন্তু ঠিক নয়। স্থানীয় উদ্যোগে শিক্ষাঙ্গনের অনেক সমস্যাই সমাধান করা যায়। তিনি সিদ্ধান্তে বলেন, শিক্ষক স্বল্পতা দূর করতে স্থানীয় মেধাবী শিক্ষার্থীদের খ-কালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। শিশুদের প্রতি আইন প্রয়োগ করে কোনো কিছু বাস্তবায়ন করা ঠিক হবে না। তিনি আরো বলেন, দরিদ্রতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে কাজ করতে হবে। শিশুদের মন নরম, তাদেরকে কষ্ট দেয়ার মত কোন আচরণ করা যাবে না। তিনি সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সতর্ক অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সামান্য একটি সংবাদে একটি শিশুর জীবন ভেঙ্গে যেতে পারে। শিক্ষাঙ্গনে আবাসিক সমস্যা সমাধানে বলেন, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক সমস্যা সমাধান করার সামর্থ্য এখনও সরকারের হয়নি। তবে শিক্ষার উন্নয়নে সামর্থ্য রয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, শিশুদের এরূপ সংলাপ বছরে দু-এক বার করা যেতে পারে। এনসিটিএফ-এর ভলান্টিয়ার ও গণমাধ্যমকর্মী কাউছুল উল রাবি্বর সঞ্চালনায় ও সংগঠনের সভাপতি মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ান, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা কাউচার আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্টেট উম্মে হাবিবা মীরা, সেভ দ্যা চিলডেনের ইয়ূথ ভলান্টিয়ার সুমনা শিল্পী, মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষিকা নুরুন্নাহার আক্তার বকুল। সংলাপ অনুষ্ঠন সঞ্চালনা করেন এনসিটিএফ-এর সাধারণ সম্পাদক আসিফ সেজান। উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জীবন কানাই চক্রবর্তী সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবক।