প্রতিনিধি
মতলব উত্তর উপজেলার বড় হলদিয়া গ্রামের ডাঃ আসমা আত্মহনন মামলায় শ্বশুর-শ্বাশুরীসহ ৪ আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত ২দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল ২১ জুলাই সোমবার তাদের রিমাণ্ডের জন্য মতলব উত্তর থানায় নেয়া হয়েছে।
মতলব উত্তর থানার জিআর ৯/১৪ মামলার আসামী নিহত আসমার শ্বশুর মেজর (অবঃ) আবদুল মালেক গাজী, শ্বাশুরী শাহানারা বেগম, নিহত আসমার স্বামী মাহাদী মাসুদের পরকিয়া প্রেমিকা রাবেয়া রায়হান রীমা ও রাবেয়া রায়হান রীমার মা পারভীনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। এই মামলার প্রধান আসামী মাহাদি মাসুদ পলাতক রয়েছে। এ বছরের ১০ ফেব্র“য়ারি ডাঃ আসমা হত্যার এ মামলাটি রুজু করা হয়। ডাঃ আসমা সুলতানা ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের বড়হলদিয়া গ্রামের মোঃ আলমগীর মিয়ার মেয়ে।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানান, মামলার বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামীদের আদালত দু’দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশ বলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
কক্সবাজার পর্যটন এলাকার হোটেল কক্ষে ডাক্তার আসমা সুলতানা আত্মহনন করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, ডাঃ আসমা সুলতানা ও মাসুদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রেমের সম্পর্ক থাকায় পরিবারের অমতে ২০১০ সালের ১০ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন। বিয়েতে পরিবারের মত না থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দু’ পরিবারের মধ্যে নানা সমস্যা লেগেই থাকত। বাবা-মা’র স্নেহ ভালবাসা ত্যাগ করে নিজ পরিবার ছেড়ে স্বামী মাসুদের পরিবারকে আপন করে নেন আসমা। কিন্তু শত চেষ্টার পরেও আসমা আপন হতে পারেন নি তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও মাসুদের মামীর কাছে। প্রায় সময় উল্লেখিত লোকজনদের হাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে। অব্যাহত নির্যাতনে বাধ্য হয়ে ৭ ফেব্র“য়ারি আসমাকে কক্সবাজার গিয়ে যে হোটেলে হানিমুন হয়েছিলো সেই হোটেলে ওঠে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আসমার পরিবারের লোকজন। আসমার আত্মীয়-স্বজন আরো জানান, আসমা ও মাসুদ স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও তারা পরস্পর মামাতো ভাই ও ফুফাতো বোন।
আসমার বাবা আলমগীর মিয়া জানান, ডাঃ আসমা ঢাকা ইউনাইটেট হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ের পর থেকে আসমাকে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও মাসুদের মামী কোনোভাবেই সহ্য করতে পারেন নি। সবসময় নানাভাবে নির্যাতন করতেন। অপরদিকে আসমার স্বামী মামাতো বোন রাবেয়া রায়হান রীমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল। এ পরকিয়া প্রেমের কারণে তাদের পরিবারে অশান্তি ছিল।
তিনি আরো জানান, আসমা মৃত্যুর আগে যে চিরকুট লিখে গেছে তাতেও স্পষ্ট প্রমাণ মিলে কে কে আসমাকে নির্যাতন করতো। সুতারাং মামলার জন্য এটাই যথেষ্ট।
উল্লেখ্য, ৭ ফেব্র“য়ারি সকাল সাড়ে ৯টায় বর্তমান ঢাকা খিলগাঁও এলাকার মোঃ আলমগীরের কন্যা ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ আসমা সুলতানা (২৮) পর্যটন এলাকার কলাতলীর বীচ সিটি রিসোর্ট-এ ওঠে আত্মহত্যা করে।
শিরোনাম:
বুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।