প্রতিনিধি
চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী শফিকুর রহমান ভূঁইয়া অভিযোগ করে বলেছেন, প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করে একটি কুচক্রী মহল বর্তমানে নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে। আমার নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে এবং পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছে। যারাই আমার নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে, নির্বাচনী এজেন্টের দায়িত্বে আছেন তাদেরকে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে। যাতে ভয়-ভীতিতে সাধারণ ভোটার, আমার কর্মীসহ সমর্থক ও এজেন্টরা ভোট কেন্দ্রে না আসে এবং নিরুৎসাহিত হয়। পুলিশের এ ধরনের আচরণ অনৈতিক এবং অন্যায়। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব অভিযোগ করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে ভালো এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়ায় স্থানীয় সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কিছু কুচক্রী মহলের ইন্ধনে এবং ইশারায় প্রশাসন যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে। সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে পৌরবাসীকে অবহিত করার জন্য তার এ সাংবাদিক সম্মেলন।
শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, তিনি প্রথম থেকেই নির্বাচনী কার্যক্রম নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ আমার কর্মী, সমর্থক, নির্বাচনী এজেন্ট যারাই কাজ করছে তাদেরকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকা সত্ত্বেও সন্দেহজনকভাবে নিয়ে অন্য মামলায় আটক দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করছে। ১৪নং ওয়ার্ডের বাবুরহাটে এবং ৫নং ওয়ার্ডে রঘুনাথপুর কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আমার নির্বাচনী দু’জন এজেন্টকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী কাজের লোকজন ও সমর্থকদের
যেভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে, পোস্টার, ব্যানারে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে তাতে কিভাবে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব? এর আগেও আমার ২ জন নেতাকে আটক করা হয়। শফিক ভূঁইয়া প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণ বিধি লংঘনের অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষ মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোট কেন্দ্র ব্যবহার করে নির্বাচনী সভা করা হচ্ছে। নাগরিক কমিটির ব্যানারেও তাই করা হচ্ছে। মন্ত্রী পদমর্যাদায় সরকারি প্রটোকল ব্যবহার করে ভোট চাওয়া হচ্ছে। আমার নির্বাচনী কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকরা সামনা-সামনি মিছিল শ্লোগান দিচ্ছে। উল্লেখিত অভিযোগ প্রশাসনকে এবং নির্বাচন কমিশনকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হলেও প্রতিকার পাচ্ছি না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে ২৯ মার্চ নির্বাচন নিয়ে পৌরবাসীর কাছে প্রশ্ন থেকে যাবে।
প্রেসক্লাব সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশার পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী। উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের সকল স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জন বা বয়কট করবেন কিনা জনৈক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জন বা বয়কট করার প্রশ্নই উঠে না। ঐতিহ্যবাহী এ পৌরসভার নির্বাচন সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকবে বলে আমি আশা করি। এক পর্যায়ে মেয়র প্রার্থী শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, কিছু কিছু পত্রিকা অসত্য সংবাদ প্রকাশ করছে। কিছু পত্রিকা তার নিরপেক্ষতা হারাচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, সত্য ঘটনা লিখুন। অসত্য ঘটনা লিখে কাউকে অসম্মান করলে মনে রাখবেন আগামী দিনে আপনাকেও অসম্মানের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ২৯ মার্চ পৌরসভা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং স্বচ্ছ হবে। পৌরবাসীকে দেয়া আশ্বাস প্রশাসন রাখবেন। পরিশেষে সকল সাংবাদিকের সহযোগিতা কামনা করেন।