প্রতিনিধি
সংস্কারের মাত্র ৫ মাসের মাথায় হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের বেশ কিছু অংশের স্লাইটিং দেবে গেছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে সড়কটি মেরামত করা হলেও নিম্নমানের কাজের কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। সংস্কারের কয়েক মাসের মধ্যে সড়কটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঐ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা তা নিয়ে উপহাস ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। তবে সড়ক নষ্ট হওয়ার জন্যে হাজীগঞ্জ সড়ক বিভাগ সড়কে অতিরিক্ত লোডকে দায়ী করছে। রিপেয়ারিং অংশে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগাদা দেয়া হয়েছে বলে হাজীগঞ্জ সওজ অফিস সূত্রে জানা গেছে।
সম্প্রতি হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কে সরজমিনে গেলে দেখা যায়, সড়কটির ফরিদগঞ্জ উপজেলার অংশ মনতলা-চালিয়াপাড়া ও ফকিরবাজার অংশের পশ্চিম অংশ ভালো থাকলেও পূর্ব অংশ স্লাইটিং পুরোপুরি উঠে তা দেবে (লেপ্টে) সড়কের পাশে মাটিতে গিয়ে মিশে গেছে। স্থানীয়রা জানায়, সড়কটি মেরামতের মাত্র ৪/৫মাসের মধ্যে এভাবে নষ্ট হয়ে গেলো, কি কাজ হয়েছে তা তো আপনারা ভালো করে বুঝতে পারছেন।
হাজীগঞ্জ সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উক্ত সড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মধ্যে যেটুকু সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা রিপেয়ারিং করার জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। ঐ ঠিকাদার এ কাজ সহসা করে দিবে বলে জানা গেছে।
এ সড়ক মেরামতের সময় সেকশন অফিসারের দায়িত্বে থাকা সওজ হাজীগঞ্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী কার্যালয়ের সেকশন অফিসার (এস ও) আঃ সালাম জানান, এই সড়ক নষ্ট হওয়ার পেছনে একমাত্র দায়ী বালু পরিবহন। এ সড়কের উপর দিয়ে ১০ চাকার গাড়িতে করে প্রতিনিয়ত বালু পরিবহন করা হয়ে থাকে। আর সড়কের বাম পাশ ধরে ঐ ১০ চাকার গাড়িগুলো চলাচল করে বিধায় সড়কের বাম পাশটা নষ্ট হয়ে গেছে।
এই কর্মকর্তা এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আসলে সড়কটি এতো তাড়াতাড়ি নষ্ট হওয়ার আরেকটি কারণ হলো এটি নির্মাণে অতি দ্রুত কাজ করতে হয়েছে এবং তা করা হয়েছে বর্ষা মৌসুমে।
এ সড়ক মেরামতের সময় সেকশন অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন আরেকজন সেকশন অফিসার (এস ও) সফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, কাগজপত্রে আমাদের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৮ মাস হতে চলছে। তবে এ নিয়ে আমরা ডিপার্টমেন্টে লেখালেখি করেছি ও ঠিকাদার সড়ক দেখে গেছে এবং তা মেরামত করে দিবে কয়েক দিনের মধ্যে।
সওজ হাজীগঞ্জ-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আঃ মতিন জানান, ঠিকাদার এই সপ্তাহের মধ্যে কাজ করে দিবে বলে ঠিকাদারের সাথে আমাদের কথা হয়েছে।
জানা যায়, নোয়াখালী-রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরীপুর সড়কের মধ্যে জেলা সওজের অংশ প্রায় ১০ কিলোমিটার। চাঁদপুর সওজের আওতাভুক্ত হলে ও মূলত এই ১০ কিলোমিটার সড়ক দেখাশুনা করছে হাজীগঞ্জ সড়ক বিভাগ। গত ১ দশকে সড়কটি সংস্কার না হলেও গত কয়েক বছর ধরে তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বর্তমান সরকারের গত সময়ে এ নিয়ে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠসহ অধিকাংশ পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হওয়ার পর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। আর এ নিয়ে সড়ক বিভাগ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলে ও তার কাজ আর করা হয়ে উঠেনি। ঐ সময়ে ঐ বরাদ্দ কয়েকবার ফেরৎ গেলেও স্থানীয় এমপির বিশেষ বরাদ্দে নির্বাচনের কয়েকমাস আগে অর্থ বরাদ্দ ছাড় দেয়া হলে কাজ শুরু হয়। পরে ঐ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।