প্রতিনিধি
চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও চাঁদপুর পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৪ দিনব্যাপী ২১শে বই মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।
গতকাল ২০ ফেব্র“য়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় বই মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেন। প্রথমে তিনি বই মেলায় প্রবেশের প্রধান গেইটে ফিতা কেটে মেলা প্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি ও বিশেষ অতিথিগণ মেলায় স্থাপিত স্টলগুলো ঘুরে দেখেন। শহীদ মিনার বেদীতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, অমর একুশে ফেব্র“য়ারি আমাদের প্রাত্যহিক সাংস্কৃতির একটি উৎস্য। বই আমাদের নিত্য দিনের বন্ধু। সকল শ্রেণীর পেশা ও সব বয়সী মানুষের জ্ঞানার্জনের বন্ধু হলো বই। আমরা যে ভাষায় কথা বলি তা ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জন করা হয়েছে। আর মাতৃভাষা দিবস হলো তারই ফলশ্র“তি। আর যারা সংস্কৃতিমনা মানুষ তাদের মনের খোরাক আসে বই থেকে। তিনি আরো বলেন, বিশ্ব দরবারে আমরা এখন এ ভাষাকে নিয়ে গর্ববোধ করতে পারছি। এই শহরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা, কম্পিউটার মেলা, পিঠা উৎসব হয়। পাশাপাশি বই মেলাও হয়ে থাকে। আর তাতে আমাদের সন্তানেরা বই মেলা থেকে বই কিনে পড়ে জ্ঞানার্জন করে থাকে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর বলেন, আমরা রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য অনেকে আত্মাহুতি দিয়েছে।তাদের মধ্যে রফিক, বরকত, জব্বর, সালামসহ আরো অনেকে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরে ছোট পরিসরে হলেও একুশে বই মেলা করা হয়। এখানে অনেক ধরণের বই স্টলগুলোতে পাওয়া যায়। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত সব ধরণের বই পাওয়া যায়। আমি সকলের কাছে অনুরোধ রাখবো একুশের প্রথম প্রহরে কেউ যেন শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা না করে শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। বই মেলা উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অজয় ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও হাফেজ আহমেদের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ সাদেকুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন। এর মাঝেই চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে প্রমিত উচ্চারণ ও আবৃত্তি কর্মশালার অংশগ্রহণকারীদের থেকে ২৬ জনকে সনদ প্রদান করা হয়। রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুরাণবাজার উদয়ন সঙ্গীত বিদ্যালয়ের পরিবেশনায় মাতৃভাষা দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
চারদিন ব্যাপী একুশে বই মেলায় স্থান পাওয়া স্টলগুলো হলো – কাঁশবন বুক ক্লাব, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, চাঁদপুর পৌর পাঠাগার, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল লাইব্রেরী, মাস্টার লাইব্রেরী, ইউনিক লাইব্রেরী, বই মেলা, বই বিচিত্রা, তাজমহল লাইব্রেরী, মোহাম্মাদিয়া লাইব্রেরী, চাঁদপুর শিশু একাডেমী, চাঁদপুর জেলা পুলিশ।