১ লাখ টাকা পেয়ে ফিরিয়ে দেয়া সেই আলোচিত সজীবকে অবশেষে অটোবাইক কিনে দেয়া হয়েছে। সততার পুরস্কার হিসেবে বুধবার দুপুরে চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে তাকে একটি অটোবাইক প্রদান করে বিকাশ কর্তৃপক্ষ। এ সময় গাড়ির চাবি সজীবের হাতে তুলে দেয়া হয়।
একই সাথে টাকা ফিরিয়ে দিতে সজীবের মাধ্যমে থানা পুলিশকে খবর দিয়ে সহায়তা করায় সজীবের প্রতিবেশী ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের অফিস সহকারী বাদল গাজীকে নগদ ৫ হাজার টাকা পুরস্কৃত করা হয়।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, বিকাশের চাঁদপুরের পরিবেশক আলমগীর আলম জুয়েল মিয়াজী, সজীবের বাবা দিনমজুর দেলোয়ার সর্দারসহ গণমাধ্যমকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সজীব এমন একটি গাড়ি পেয়ে বেশ খুশি। এতোদিন সে অন্যের অটোবাইক ভাড়ায় চালাতো। এখন তা নিজের হওয়ায় বিকাশ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
বিকাশের চাঁদপুর পরিবেশক আলমগীর আলম জুয়েল জানান, চালক সজীব সততার যে পরিচয় দিয়েছে, তাতে মুগ্ধ হয়ে পুরস্কারস্বরূপ তাকে সচ্ছলভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে একটি অটোবাইক কিনে দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, এটি সততার দাম নয়, কারণ টাকা দিয়ে সততা কেনা যায় না। এটাকে আমরা বরং ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবেই দেখতে চাই। সমাজের প্রতিটি লোকের উচিত সজীব এবং বাদলের মত করে সুস্থ ও নির্লোভ মানসিকতা গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, এমন একজন সজীবের মতো প্রতিটি মানুষ সততার মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেবেন। এমন প্রত্যাশা করে সজীবকে পুরস্কৃত করায় বিকাশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুন রোববার সকালে লেনদেন করার জন্যে চাঁদপুর ইউসিবিএল (ব্যাংক) থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন করেন বিকাশের কর্মকর্তা। ওই টাকা পাঁচটি ব্যাগে ভরে কর্মস্থলে ফেরার পথে শহরের জোড়পুকুর পাড়ে বিকাশ কর্মকর্তা মাসুদ ভুল করে ১টি টাকার ব্যাগ অটোবাইকে ফেলে যান। ওই ব্যাগে ৬১ লাখ টাকা রাখা ছিল। ওই দিনই ৭ ঘণ্টা পর চালক সজীব পুলিশের মাধ্যমে সেই টাকা প্রকৃত মালিক বিকাশ পরিবেশককে ফিরিয়ে দেন।
সততার এমন দৃষ্টান্ত দেখে পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুর রহমান তাৎক্ষণিক চালক সজীবকে নগদ ৫ হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
জানা যায়, পুরাণবাজার এলাকার গদিঘর লেবার দেলোয়ার সর্দারের দুই ছেলে রাজিব ও সজীব। থাকেন মধ্যশ্রীরামদীতে। দুই ভাই স্থানীয় হরিসভা সড়কে জনৈক কাদিরের ভাড়া ঘর অটো গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। এখানেই তাদের দুই ভাইয়ের গাড়ি থাকে। বিকাশের ফেলে যাওয়া টাকার ব্যাগটি সজীব ও বাদলের দেয়া তথ্য অনুুযায়ী চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ এ গ্যারেজ থেকে ওই গাড়িতে টাকার ব্যাগটি যেভাবে ছিল, সে অবস্থায়ই উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং বিকাশের এজেন্টকে বুঝিয়ে দেয় ।
অটোবাইক চালকের মোট ৬১ লাখ টাকা পেয়ে ফেরত দেয়ার ঘটনা দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ফেসবুকে ঘটনাটি ভাইরাল হয়।