মিজান লিটন ॥
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতাল চলাকালে সন্ধ্যা নামতেই ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ছে শহরের বিভিন্ন মার্কেটগুলো। বোমা ও ভাঙচুরের আশঙ্কায় বিক্রেতারাও অন্য সময়ের তুলনায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে দোকানপাট বন্ধ করে বাসায় ফিরছেন। ফলে জনসমাগমের জন্য পরিচিত মার্কেটগুলো রাত ৮টা নাগাদ জনমানবশূন্য হয়ে পরছে। অথচ ক্রেতাদের ভিড় এবং বিক্রেতাদের হাঁকডাকে এ সময়ে মার্কেটগুলো মুখর থাকার কথা ছিল।
রবিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, চাঁদপুর শহরের হাকিম প্লাজা, তমা প্লাজ, সাউথ প্লাজা, হকার্স মার্কেট, মীর শপিং সেন্টার, নিউ মার্কেট, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট সহ বড় বড় দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই বললেই চলে।
আসা-যাওয়ার পথে পেট্রলবোমা ও ককটেল হামলার আশঙ্কায় বিক্রয়কর্মীরা তো বটেই দোকান মালিকরাও মার্কেটে আসতে ভয় পাচ্ছেন। তবে অনেকে পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিক্রেতারা জানান, অবরোধের প্রথম দিকে মার্কেটে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকলেও বেচাকেনায় তেমন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু এখন সন্ধ্যা নাগাদ ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ায় বিক্রি কমে গেছে প্রায় ৮০ শতাংশ।
অনেক বিক্রেতা বলেন, “এখন গড় বিক্রি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় নেমে এসেছে। অথচ আগে সাধারণ দিনে গড়ে ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করতাম। ক্রেতা না থাকায় ৭টা-৮টার মধ্যেই দোকান বন্ধ করে দিচ্ছি।”
অন্য দোকানদারদের মুখেও শোনা গেল একই কথা। তারা আরও জানালেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সাধারণত ক্রেতাদের ভিড় বেশি থাকে। কিন্তু গত কয়েকদিনে শহরের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের কারণে রাতেতো দূরের কথা দিনের বেলাও ক্রেতা শূণ্য হয়ে পড়ছে। এমনকি অনেকে সারাদিন কোনো বিক্রিই করতে পারেননি।
কয়েকজন ক্রেতাদের সাথে কথা বলেও এর সত্যতা পাওয়া গেল। এদের কেউ কেউ পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য বাধ্য হয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন। কেউ কেউ চলার পথে মার্কেটে ঢুঁ মারছেন। তবে সবার মধ্যেই তাড়াহুড়োর প্রবণতা দেখা গেল।
এমন একজন ক্রেতা জানান, এক আত্মীয়ের বিয়ে উপলে কিছু উপহার সামগ্রী কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, “মা তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে বলে দিয়েছেন। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কোনো কিছুই পছন্দ করতে পারছি না।
অনেক দোকান মালিকরা জানায়, বিক্রি কমে আসায় দোকান-খরচই উঠে আসছে না। আমরা সঞ্চয় ভেঙে কোনো মতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অবরোধ-হরতাল অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা বুঝতে পারছেন না। “ভাই, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দোকান খরচ মেটাতে পারছি না, কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। সাধারণ মানুষ হিসেবে এ অচলাবস্থার একটা বিহিত চাই।
শিরোনাম:
রবিবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।