চাঁদপুর: চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি’র প্রানপন চেস্টার ফল হিসেবে চাঁদপুরে সরকারিভাবে নির্মিত হতে যাচ্ছে কিডনী ডায়ালাইসিস সেন্টার। এ কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার হবে ১০ শয্যাবিশিষ্ট । অচিরেই করা হবে এ কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারটি। চাঁদপুর জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা ও আশার ফসল ছিল কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারটি। যা হচ্ছে চাঁদপুরে একটি আনন্দের সংবাদ যোগ হলো চাঁদপুরের চিকিৎসায় সেবার সাথে।
বিশেষভাবে বলা যেতে পারে এর আগে চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ ডাঃ দীপু মনির প্রচেষ্টায় হাসপাতালে হাই ফ্লো সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট, করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্যে ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ আর-টি পিসিআর ল্যাব স্থাপনসহ স্বাস্থ্যসেবায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হয়। এর ফলে চাঁদপুর জেলাবাসী ছাড়াও এর আশপাশের জেলার মানুষজনও মারাত্মকভাবে উপকৃত হবেন।।
আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ১০ শয্যাবিশিষ্ট এ কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারটি করা হবে। হাসপাতাল ভবনের চতুর্থ তলায় এর জন্যে প্রাথমিকভাবে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে সম্প্রতি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা জেলা প্রশাসক সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এই কমিটির সহ-সভাপতিও জেলা প্রশাসক। সকালে সভা শুরু হওয়ার পর প্রথমেই জেলা প্রশাসক বিষয়টি উপস্থিত সকলের মাঝে উপস্থাপন করেন।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, সারাদেশে ৪৪টি জেলায় পর্যায় কমে এ কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন হবে। তার মধ্যে চাঁদপুরও তালিকায় আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে পাঠালেও আমরা কমিটির লোকজন জানতে পারিনি। তিনি সেখানে তিনজনের মতামত নিয়েই ওই চিঠির উত্তর অধিদপ্তরের কাছে পাঠিয়ে দিলেও তা’ অধিদপ্তর সন্তোষজনক ভাবে মেনে নেননি। পরবর্তীতে অধিদপ্তর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ককে জানিয়ে দেয় যে, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি নামে যে কমিটি আছে ২১ সদস্যবিশিষ্ট, সে কমিটিকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে জানিয়ে সভা করে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। আর ওই কমিটির সভাপতি হলেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
জেলা প্রশাসক বলেন, তত্ত্বাবধায়ক বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীকে জানালে তিনি ত্বরিৎ সভা ডেকে সিদ্ধান্ত ওেয়ার জন্য বলেন। জেলা প্রশাসক সভায় বিষয়টি ওপেন আলোচনা করতে দিলে কমিটির উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, শিক্ষামন্ত্রীর চাঁদপুরস্থ প্রতনিধি অ্যাডঃ সাইফুদ্দিন বাবু, গণপূতের নির্বাহীসহ সকল সদস্যই কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারটি আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ তলায় স্থাপনে একমত পোষণ করেন। সেক্ষেত্রে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের বর্তমান ক্লাসরুম কক্ষে এটি স্থাপন করার জন্য সকলে একমত হন।
সভায় সদস্যরা বলেন, মেডিকেল কলেজের ক্লাসগুলো উপরে ৫ম তলায় কয়েকটি রুম করে সেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসগুলো সম্পন্ন করবে। এতে প্রথমত উপস্থিত চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ একটু বেঁকে বসলেও পরে তিনি একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার সাথে আমি একমত পোষন করছি। তবে ডায়ালাইসিস সেন্টার করতে গিয়ে যেনো মেডিকেল কলেজের ক্ষতি না হয় সেদিকে সবাই খেয়াল রাখার সবাইকে বলেন।
পৌর মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিললুর রহমান জুয়েল বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, সরকারি হাসপাতালে এই কিডনি ডায়ালাইসিস আমাদের নতুন একটা সম্পদ। এটিকে আমাদের যে কোনো মূল্যেই করতে হতে দিতে হবে।
সভায় উপস্থিত এই কমিটির সদস্য সচিব আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ হাবিব উল করিম বলেন, গণপূর্ত বিভাগ এটি দেখে ঠিক করে দিলে আশাকরি কোনো সমস্যা হবে না। সভায় বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ নূরুল হুদা, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ইলিয়াছ, পৌর কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াস, গণপূতের নির্বাহী প্রকৌশলী, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটাঃ নাছির উদ্দিন খান, সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মনিরসহ অন্যরা এ বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন।
সভায় সবার কথা শুনে জেলা প্রশাসক সর্বসম্মতিক্রমে এই কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ তলায় স্থাপনের সিদ্ধান্তে উপনিত হয়ে রেজুলেশন করে তা অধিদপ্তরে পাঠানোর জন্যে কমিটির সদস্য সচিব হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তথা কমিটির সভাপতি ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে অনেক আগ্রহী এবং আন্তরিক। তিনি নিজ থেকেই খোঁজখবর নেন। চাঁদপুরের জন্যে এটি পরম সৌভাগ্যের একটি বিষয়।
এদিকে এ প্রকল্পের পরিচালক ডাঃ ইউনুসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আপনাদের ডিসি সাহেবের সাথে আমার আলাপ হয়েছে। আশাকরি রেজুলেশন তথা সিদ্ধান্ত এলেই আমাদের কাজটি করতে সুবিধা হবে। তিনি আরও বলেন, এই ডায়ালাইসিস সেন্টারটি আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনালে হাসপাতালের অভ্যন্তরেই হতে হবে। এটিই নিয়ম।
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট/চাঁদপুরনিউজ/