প্রতিনিধি =
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে শাটল ট্রেন ও জনবল সঙ্কটের কারণে ট্রেন যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এর ফলে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী সাগরিকা এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন ৬ ও ৭ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৭ ঘন্টা বিলম্বে চাঁদপুর এসে পৌঁছায়। এতে করে দক্ষিণাঞ্চলীয় লঞ্চ যাত্রীরা ঐ ট্রেনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর সকালে সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে কয়েকশ’ যাত্রী নিয়ে রওয়ানা করে। এই ট্রেনটি চাঁদপুর বড় স্টেশনে এসে পৌঁছার কথা ছিল ঐদিন দুপুর দেড়টায়। ট্রেনটি লাকসাম জংশনে আসলে শাটল ট্রেন না থাকায় প্রায় ৪ ঘন্টা সেখানে অবস্থান করতে হয়।
পরবর্তীতে সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি শাটল ট্রেন না থাকায় নিজেই চাঁদপুরে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এসে পৌঁছায়। এই কয়েকঘন্টা ট্রেন যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। একই অবস্থা ঘটে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্ষেত্রেও। বিকেল সোয়া ৫টায় চট্টগ্রাম থেকে ৫-৭শ’ যাত্রী নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। এই ট্রেনটি চাঁদপুর বড় স্টেশনে পৌঁছার কথা ছিল রাত সাড়ে ১০ টায়। কিন্তু আন্তঃনগর মেঘনা ট্রেনের চালক মোঃ সাহাবুদ্দিন ট্রেনটিকে ধীর গতিতে চালিয়ে লাকসাম জংশনে এসে পৌঁছায় রাত সোয়া ১২টায়। এই ট্রেনটি শাটল ট্রেনের অপেক্ষায় থেকে চাঁদপুর এসে পৌঁছায় গতকাল ৭ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ৭টায়। প্রায় সাড়ে ৭ ঘন্টা আন্তঃনগর মেঘনা ট্রেন যাত্রীরা নিদারুনভাবে লাকসাম স্টেশনে বসে থেকে কনকনে শীতের মাঝে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। চাঁদপুর বড় স্টেশন মাস্টার মোঃ হোসেন মজুমদারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সহকারী স্টেশন মাস্টার মোঃ সিরাজুল ইসলামের উপর তথ্য দেয়ার জন্য ছেড়ে দেন। সহকারী স্টেশন মাস্টার মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপটে হরতাল অবরোধ চলার কারণে চাঁদপুরসহ দেশের অন্যান্য স্থানে রেলপথে নাশকতার ঘটনা ঘটছে।
এজন্য চাঁদপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ রেলওয়ের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত বার্তা প্রেরন করেন সাগরিকা ও মেঘনা ট্রেন চাঁদপুরে আসার পূর্বে যেন লাকসাম থেকে একটি শাটল ট্রেন চাঁদপুর অভিমূখে প্রথমে ছেড়ে আসে। এর পেছনেই ছেড়ে আসবে সাগরিকা ও মেঘনা ট্রেন। এর কারণ হলো রেললাইনে যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলে সাটল ট্রেনটি প্রথমে দুর্ঘটনায় পতিত হবে। রেললাইন সঠিক আছে কিনা এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যই এই শাটল ট্রেন শাহ্তলীতে ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ইঞ্জিন, জনবল সঙ্কটের কারণে এ দু’টি ট্রেনের পূূর্বে শাটল ট্রেন চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে।
তিনি আরো জানান, পূর্বে মেঘনা ও সাগরিকা ট্রেন ঘন্টায় যদি ৫০ কিঃমিঃ গতিতে চলাচল করতো তা বর্তমানে ২০ কিঃমিঃ গতিতে চলাচল করছে। এর জন্যে চাঁদপুরে ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে চলাচল করতে পারছেনা। গতকাল সকালে আসা আন্তঃনগর মেঘনা ট্রেনের যাত্রীরা জানায়, রাতভর লাকসাম স্টেশনে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। চালকের খাম-খেয়ালীপনার কারণে আমাদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় আসা সাগরিকা ট্রেন যাত্রীরা টিকেট করে চট্টগ্রাম যাওয়ার আসা নিয়ে ট্রেন ছাড়ার কথা শুনে গাড়িতে কয়েকশ’ যাত্রী হয়ে চরে বসে। চাঁদপুরে শাটল ট্রেন না থাকায় সাগরিকা ট্রেনটি ঐ দিন রাতে আর ছেড়ে যায়নি। এতে করে চট্টগ্রাম অভিমূখি ঐ যাত্রীরা রাতভর এই ট্রেনটিতে কাটাতে হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় যখন মেঘনা ট্রেনটি পুনরায় চট্টগ্রাম অভিমূখে ছেড়ে যায় তখন সাগরিকা ট্রেনের যাত্রীরা টিকেট পরিবর্তন করে ঐ ট্রেনে করেই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।
শিরোনাম:
শনিবার , ১৫ মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।