নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
চাঁদপুর দি-ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগণষ্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে সিজারের সময় পেটে গজ রেখে সেলাই করার অভিযোগে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ চেয়ে গত ২৭ জানুয়ারি ৮জনকে আসামী করে দাদন নামে এক ব্যাক্তি চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার নং- ৫৪।
আসামীরা হলো ঃ ১। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস.এম. শাহ আলম রবিন, ২। ডাক্তার শামছুন নাহার তানিয়া, ৩। নন ডিপ্লোমাধারী নার্স ও ওটি ইনচার্জ সুলতানা আক্তার সেতু, ৪। পরিচালক আঃ খালেক কিরন, ৫। আব্দুল গাফ্ফার মাহিম, ৬। ইমাম হোসেন, ৭। নান ডিপ্লোমাধারী নার্স হাসিনা আক্তার সেলি, ৮। ওটি ক্লিনার সমিতা বেগম সকিনা।
মামলা ও তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামলার বাদী চাঁদপুর পুরান বাজার এলাকার দাদনের স্ত্রী রাহেলা আক্তারকে (৩২) চাঁদপুর দি-ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগণষ্টিক সেন্টারে ভর্তি করান। ভর্তির পর ওইদিন রাতেই সিজার করা হয়। তিনদিন পরে রিলেজ দেওয়ার ফলে বাড়িতে গেলে অপারেশনেরস্থানে ব্যাথা শুরু হলে ১নং বিবাদীকে জানানো হলে তিনি ঠিকমতো ওষুধ খাওয়ার জন্য বলেন। কয়েকদিন পর অপারেশনের স্থান দিয়ে পুঁজ ও পানি বের হলে পুনরায় হাসপাতল কৃর্তপক্ষকে জানালে তারা হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন। হাসপাতলে আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডাক্তার শামছুন্নাহার তানিয়ার কাছে পাঠালে তিনি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য পরামর্শ দেন। ১৯ আগষ্ট চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় ঢাকা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে গেলে হাসপাতালের ডাক্তারগণ তার অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ২০ আগষ্ট সেখানে ভর্তি হয়ে দির্ঘ ১ মাস ২ দিন চিকিৎসা নেওয়াবস্থায় দুইবার অপারেশন করতে হয়।
মামলার বাদী জানান, ইউনাইটেড হাসপাতালে অপারেশনের সময় তার পেটের ভিতরে গজ রেখে সেলাই করে দেন। একারনেই তার পেট ফুলে যায় এবং পুঁজ রক্ত বের হতে থাকে।
ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসাপত্র ও আল্ট্রা রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, পেটের ভিতরে অপারেশনের কোন কিছু ছিলো। একারনেই অপারেশনের স্থান পঁচা লেগে পেট ফুলে যায় এবং পুঁজ রক্ত বের হতে থাকে।
দাদন আরো জানায়, ইউনাইটেড হাসপাতালের অপচিকিৎসার কারনে আমার স্ত্রী মৃত্যুর পথযাত্রী থেকে আল্লাহর অশেষ রহমতে ফিরে এসেছে। তবে এখনো সে আশংকা মুক্ত নয়। তাদের কারনে এ পর্যন্ত আমার ১০ লক্ষ টাকারও বেশি চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যায় হয়েছে। আমার স্ত্রী বর্তমানে মৃত্যুর মুখে পতিত রয়েছে, যে কোন সময় মারা যেতে পারে। আসামীগণের প্রতারনা, অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারনে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
দাদন জানায়, ইউনাইটেড হাসপাতালে অপারেশনের সময় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামলার ১নং বিবাদী এস.এম. শাহ আলম রবিন ও তার স্ত্রী ৩নং বিবাদী নন ডিপ্লোমাধারী নার্স সুলতানা আক্তার সেতু আমার স্ত্রীর পেটের ভিতের অপারেশনের গজ রেখে সেলাই করেন। এ কারনেই আমার স্ত্রী আজকে মৃত্যুর পথযাত্রী। হাসপাতালের পরিচালক ও ডিসেমাচারীর দায়িত্বে থাকা মামলার ৪নং বিবাদী আঃ খালেক কিরন ঠিকমতো ওষুধ সরবরাহ করেননাই এবং আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন, মামলার ৫ ও ৬ নং বিবাদী রোগী নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে মামলা হামলা সহ ব্যাপক ক্ষতি সাধন করবে বলে হুমকী প্রদান করে। ৭ ও ৮ নং বিবাদী চিকিৎসার সময় অনেক গাফলতি করেন।
দাদন আরো জানায়, বিএমএ’র সভাপতি ডাক্তার মাহমুদুন নবী মাছুম, ডাক্তার শামছুন্নাহার তানিয়ার স্বামী ডাক্তার হাসানুর রহমান, মফিজ পাটওয়ারীসহ শহরের গণ্যমান্যদেরকে নিয়ে এ বিষয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়। অপারেশনে ডাক্তার শামছুন্নাহার তানিয়ার কোন ত্রুটি না হলেও মামলার ১ ও ৩নং বিবাদীর কারনেই রোগী মৃত্যুর পথযাত্রী হয়েছে বলেও জানা যায়।
যে হাসপাতালে নেই ডিউটি ডাক্তার, ডিপ্লোমাধারী নার্স, ডিপ্লোমাধারী টেকনেশিয়ান, ওটি ইনচার্জ। সেই হাসপাতালে কি ভাবে চিকিৎসা প্রদান করে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে এসেছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসা সহ নানান অপকর্ম নিয়ে রয়েছে আরো বহু অভিযোগ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষ সহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভোক্তভুগি পরিবার ও সচেতন মহল
শিরোনাম:
শনিবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৬ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।