সিনিয়র করেসপেন্ডন্ট: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা এক কোটিপতি স্বাস্থ্য সহকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১ টার উপজেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত হোসেন এর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেনের নেতৃত্বে সিভিন সার্জনের তদন্ত কমিটি তদন্তে বসেন।
অভিযুক্ত ওই স্বাস্থ্য সহকারী মো. শাহজাহালাল সরকারি ডিউটি ফাঁকি দিয়ে ঠিকাদারী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ঠিকমত ইপিআই কেন্দ্রে সেবা দেন না। এবং কাজ না করেও বেতন উত্তোলন করেন নিয়মিত। গত কয়েকদিন ধরে এসব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে আলাদা করে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে চট্টগ্রাম বিভাগীয় টীমের প্রধান চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত হোসেন তদন্ত বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনার এক পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালাল তার কর্মস্থলে ঠিকমতো টিকা দিচ্ছে কি-না বা টিকা কার্ডে টিকা দেয়ার পর তার স্বাক্ষর আছে কি-না যদি না থাকে তবে তা আমার সামনে উপস্থাপন করেন। তদন্ত কমিটির প্রধানের এমন বক্তব্যের ৩০ মিনিটের মধ্যেই তার সামনে শাহ জালালের কর্মস্থলের খাগকান্দা ও রাজুরকান্দি গ্রামের ৭টি টিকার কার্ড উপস্থাপন করা হয়েছে যেখানে শাহ জালালের স্বাক্ষর নেই।
তদন্ত শেষে কমিটির সাথে মতলব উত্তর উপজেলার একটি সাংবাদিক টিম দেখা করেন। সরকারি কর্মচরীরা চাকুরীর পাশাপাশি অন্য কোন কাজ যেমন, ব্যবসা, পার্টটাইম চাকুরী, ব্যক্তিগত লাভজনক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, ঠিকাদারী ইত্যাদি করতে পারবে কি না? এই প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন ডাঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকারি চাকুরীর যেই ডিউটি টাইম সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২.৩০ টা পর্যন্ত এর বাইরের সময়ে একজন সরকারি চাকুরীজীবি যেকোন কাজ করতে পারবে। কিন্তু ‘১৯৮৯ সালের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী (শৃক্সখলা) আইন’ এ বলা আছে, সরকারি চাকুরীজীবিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সরকারি ডিউটির বাইরে এরধরনের কোন কাজ করতে পারবে না। যদি কেউ এধরনের কাজ বা ব্যবসা করতে চায় তাহলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে করতে পারবেন। সিভিল সার্জন ডাঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, এধরনে কোন আইন আছে তা তিনি জানেন না। প্রশ্ন থেকে যায় তবে তিনি অভিযুক্ত ওই স্বাস্থ্য সহকারীকে রক্ষা করার জন্য এমনটা বললেন, নাকি আসলেই জানেন না? উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ নুসরাত জাহান মিথেন নিয়মিত অফিস করেন না, তবে কেন তাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হল? এই প্রশ্নের জবাবে কোন সদোত্তর দিতে পারেনি।
এই তদন্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা গুঞ্জন চলছে। শাহ জালাল দীর্ঘ্য ১২ বছর ধরে ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ও তাদের সাথে পার্টনারশীপে ঠিকাদারী করে আসছেন। তাই অনেকে আশংকা করছেন অদৃশ্য ইঙ্গিতে তদন্ত রিপোর্ট সঠিক নাও হতে পারে। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইতিপূর্বে তার বক্তব্যে বলেছিলেন স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালালের পক্ষে বিভিন্নস্থান থেকে তদবির হয়।
চাঁদপুরনিউজ/এমএমএ/