প্রতিনিধি
চাঁদপুর নৌ-সীমানার মোহনপুর এলাকায় মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী সোনার তরী লঞ্চের সাথে বিশাল অয়েল ট্যাংকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছে। এ ঘটনায় লঞ্চের সামনের অংশ দুমচে-মুচড়ে যায় এবং সামনের অংশে আংশিক ফাটল সৃষ্টি হয়। আহতদের মধ্যে রক্তাক্ত জখম হয় প্রায় ২০জন। গুরুতর আহত ৭ জনকে চাঁদপুর ও ঢাকায় ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। যাত্রীরা জানায়, অল্পের জন্য লঞ্চটি ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়ে শ’-শ’ যাত্রী প্রাণে বেঁচে যায়। এ ঘটনার সত্যতা শিকার করে নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালন মুহাম্মদ মোবারক হোসেন।
লঞ্চের মাস্টার ইব্রাহিম ও সুপারভাইজার মোঃ বাদল জানান, গতকাল ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি সোনারতরী ৫শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে চাঁদপুর অভিমুখে আসছিল। সকালে আংশিক কুয়াশা থাকলেও সকাল ৯ টার পর কুয়াশা কেটে যায়। সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে লঞ্চটি মেঘনা নদীর মোহনপুর এলাকা অতিক্রম করার সময় অপরদিক থেকে আসা হাইস্প্রিড কোম্পানীর বিশাল আকারের অয়েল ট্যাংকার সামিয়া-২ জাহাজটি এমভি সোনারতরীর উল্টো দিকে চলে যায়। পরে হেড ক্রসিং করতে গিয়ে চলন্ত অবস্থায় লঞ্চের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায়। যাত্রীরা হঠাৎ বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে লঞ্চের ভেতর দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। এসময় লঞ্চের সামনে থাকা যাত্রীরা প্রচণ্ড গতিতে আঘাত পেয়ে অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয় এবং কয়েক যাত্রী সোনারতরী লঞ্চের ছাঁদ থেকে ছিটকে নদীতে পড়ে যায়। ভেতরে থাকা যাত্রীরা সংঘর্ষের ফলে লোহার সাথে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়।
অনেকে লঞ্চের সিঁড়িতে অবস্থান করায় সেখান থেকে নিচে পড়ে আহত হয়। এ সময় নদীতে পড়া যাত্রীদের আত্মরক্ষাকারী বয়া সরবরাহ করে রক্ষা করে পুনরায় লঞ্চে উঠানো হয়। আহতদের মধ্যে রক্তাক্ত জখম হয় প্রায় ২০ জন। গুরুতর আহত ৭ জনকে চাঁদপুর এবং ঢাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তিকৃতরা হচ্ছেঃ নজরুল ইসলাম (রিপন) (২৫), নাসিরুল ইসলাম রাজু (২১), মজিবুর রহমান সাদ্দাম (২৫), মুক্তিযোদ্ধা চন্দন পোদ্দার (৬৫), মাওলানা মোঃ আবদূল কাদের (৬০), লঞ্চের লস্কর শাহাদাত হোসেন (৩২) ও শেখ মনির হোসেন (৩৫)-কে চাঁদপুর সরকারি জেনালের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় লঞ্চটি চাঁদপুর লঞ্চঘাটে পৌঁছলে আহত যাত্রীদের উদ্ধার কাজে ছুটে আসে চাঁদপুর জেলা স্কাউটের সাধারণ সম্পাদক অজয় ভৌমিকের নেতৃত্বে স্কাউট সদস্যর ও চাঁদপুর উত্তর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কমান্ডার ফরিদ আহমেদ মনিরের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। তারা আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে চাঁদপুর ঘাটে ছুটে আসেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক নূরুল্লাহ নূরী ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তুষার আহমেদ। এ ব্যাপারে লঞ্চের মাস্টার মোঃ ইব্রাহিম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন চাঁদপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে। মুক্তিযোদ্ধা চন্দন পোদ্দার (৬৫) জানান, তিনি সকালে এই লঞ্চে উঠে চাঁদপুর আসছিলেন। কোন কিছু আচ্ করতে পারেনি। হঠাৎ বিকট শব্দে লঞ্চটি কাত হয়ে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। এসময় তিনিসহ অন্যান্য যাত্রীরা চিৎকার শুরু করে। আল্লাহ হাতে ধরে যাত্রীদের প্রাণ বাঁচিয়েছে। ইসলামী টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার বুলবুর জানান, সম্পূর্ণভাবে লঞ্চ দুঘর্টনার জন্য দায়ী সামিয়া-২ বিশাল ওয়েল ট্যাংকারটি।
তিনি আরো জানান, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তার চলাচলের সাইড অতিক্রম করে বিপরীতে এসে সোনারতরীর সাথে সংঘর্ষ ঘটায়। এতে লঞ্চ ও যাত্রীরা আল্লাহ্র অশেষ রহমতে প্রাণে রক্ষা পায়। ঘটনার পরপর ট্যাংকার সামিয়া-২ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে চলে যায়। সোনার তরী লঞ্চে থাকা যাত্রীরা এ সময় লঞ্চ থেকে দুঘর্টনার খবর আত্মীয়-স্বজনদেরকে জানালে সবাই আতঙ্কিত হয়ে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে ছুটে আসে। এদিকে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ঢাকা ও চাঁদপুর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে চাঁদপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল, চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ, বিআইডাব্লিউটিএ চাঁদপুর নৌ-টার্মিনাল উপ-প
শিরোনাম:
শনিবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৬ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।