এম.আর. ইসলাম বাবু ॥
সামান্য অর্থের বিণিময়ে মিলছে বয়স নির্ধারনি জন্ম সনদের এক টুকরো কাগজ। এতে করে শহর থেকে শুরু করে মাত্রারিক্তহারে গ্রামগঞ্জে বেড়েছে বাল্য বিবাহ।
বাংলাদেশ সরকার ছেলেদের কমপক্ষে ২১ ও মেয়েদের সর্বনি¤েœ ১৮ বছর বয়সে বিবাহের বয়স নির্ধারন করেছে এবং বাল্য বিবাহ রোধে করেছে কঠোর আইন। এ ক্ষেত্রে শাস্তি স্বরুপ ৫০ হাজার টাকা জড়িমানা ও ২ বছরের জেল দেওয়ার বিধান করেছে। কিন্তু আইন যতো কঠিন হোকনা কেন আইনের ফাঁক তৈরির চেষ্টায় সফল অসাধুচক্র। কঠোর আইনের ফাঁকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দেওয়া একটি জন্ম সনদের বৈধতা অপ্রাপ্ত বয়স্ক একটি কন্যাকে ঠেলে দিচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। চাঁদপুর জেলায় এ ধরনের সমস্যা ব্যাধির আকার ধারন করেছে।
একাধিক জড়িপে জানা যায়, স্কুলে পড়–য়া ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেনীতে পড়–য়া মেয়েদেরকে অধিকাংশ বাবা মায়েরা বিয়ে দিয়ে নিজেদেরকে দায়সারা করছে। অনেকেই মনে করছেন একটি ভালো ছেলে পেয়েছি মেয়েটিকে পার করতে পারলেই বাঁচি। এ ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা অন্যান্য শিক্ষকদের না জানিয়ে ছুটে যায় স্থানীয় চেয়ারম্যান কার্যালয়ে। চেয়ারম্যানের মাধ্যমে যে করেই হোক সংগ্রহ করে জন্ম সনদ। অনেক অভিভাবক তারাহুরো করতে গিয়ে চেয়ারম্যানকে না পেলে ইউপি সচিবকে দিয়ে ৫০ টাকা ফিঃ এর স্থলে কিছু অর্থ বেশি দিয়ে ম্যানেজ করে নিয়ে নিচ্ছে জন্ম সনদ। অনেক মেয়েদের ক্ষেত্রে স্কুলের ভর্তি খাতায় একরকম বয়স, অথবা ভর্তির সময় যে জন্ম সনদ জমা দিয়েছে সেখানে একরকম বয়স থাকলেও পরবর্তিতে অর্থের বিণিময়ে তৈরি করা জন্ম সনদে আরেক রকম বয়স রয়েছে। বাল্য বিবাহ পড়াতে গিয়ে অভিযোগ রয়ছে অনেক অসাধু কাজীদের বিরুদ্ধে। তারা অনেকেই অভিভাবকদের বলে চেয়াম্যান কার্যালয় থেকে কোন রকম একটি জন্ম সনদ আনিয়ে দিতে। তাতে করে শারীরিক ভাবে অপূর্ণ অনেক মেয়েকে জলাঞ্জলী দিচ্ছেন অর্থের লোভে অনেকেই। পরবর্তিতে অল্প বয়স বিয়ে হওয়া অনেক মেয়েকেই স্বামির সংসার না বুঝে বাপের বাড়ীতে ফিরতে হয়েছে। তাদের অধিকাংশ অপুষ্টি, শারিরীক অক্ষমতায় নিজের জীবনকে নিস্তেজ করেছে। আমাদের সমাজে বাল্য বিবাহের কুফলগুলো ঠিক মতো তুলে ধরা হয়নি বলেও গ্রামাঞ্চলে লোকমুখে প্রচলন রয়েছে।
তবে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ নেওয়া উচিত। যেসব ইউনিয়ন পরিষদে বাল্য বিবাহকে বৈধতা দেওয়ার জন্য কম বয়সের মেয়েকে প্রাপ্ত বয়সের সনদ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
শিরোনাম:
বুধবার , ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১০ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।