মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর হোমিওপ্যাথি বিষয়ে ডিপ্লোমা বা ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়ে হতে পারেন একজন পেশাদার হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। প্র্যাকটিস করা ছাড়াও আছে হোমিও কলেজে শিক্ষকতা কিংবা সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পে চাকরির সুযোগ।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তথ্য মতে, পৃথিবীতে স্বাস্থ্য চিকিৎসা খাতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা পদ্ধতি। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ হোমিওপ্যাথি চিকিত্সা নিয়ে থাকে। অ্যালোপ্যাথির পাশাপাশি মানুষ যুগ যুগ ধরে আস্থা রেখেছে হোমিওপ্যাথির ওপর। চুয়াডাঙ্গা হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রভাষক মনিরা পারভীন মৌসুমি জানান, এখন হোমিও চিকিত্সা দেওয়া হয় আধুনিক কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে। মানুষ শুধু অ্যালোপ্যাথির ওপর নির্ভর না করে বিভিন্ন রোগের চিকিত্সার জন্য দ্বারস্থ হয় হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের। হোমিওপ্যাথিতে স্বল্প খরচে এবং সহজ পদ্ধতিতে চিকিত্সা দেওয়া হয়। তাই গ্রাম থেকে শহর—সবখানেই আছে হোমিও ডাক্তারদের চাহিদা। হোমিওপ্যাথি ডিগ্রি নিয়ে সহজেই চিকিত্সক হতে পারেন।
এ পেশার ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের রেজিস্ট্রার-কাম-সেক্রেটারি ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি বিষয়ে ডিপ্লোমা করে খুব সহজেই এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়া যায়। হোমিওপ্যাথি বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুসারে, সারা দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার ডিপ্লোমাধারী হোমিওপ্যাথি রেজিস্টার্ড ডাক্তার রয়েছেন। এ ছাড়া আছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হোমিও ডিগ্রি অর্জনকারী প্রায় দেড় হাজার রেজিস্টার্ড ডাক্তার। হোমিও বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে চেম্বার ও হোমিও ওষুধের দোকান দিয়ে বসছেন। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রকল্পে হোমিও ডিগ্রিধারীকে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। হোমিও কলেজে শিক্ষকতার সুযোগ তো আছেই।
পড়ার সুযোগ যেখানে
হোমিওপ্যাথি বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের অধিভুক্ত একমাত্র সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের অধিভুক্ত অনুমোদিত কলেজগুলোতে। রয়েছে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স, ইন্টার্নশিপসহ ছয় বছর মেয়াদি ব্যাচেলর কোর্স এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রিপ্রাপ্তদের জন্য পোস্ট ডিপ্লোমা ট্রেনিং-ইন-হোমিওপ্যাথি। মিরপুরের সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি (বিএইচএমএস) পড়ানো হয়। এ ছাড়াও কোর্সটি পড়ানো হয় ঢাকার বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও। প্রতিবছর এইচএসসির ফল প্রকাশের পরই বিএইচএমএস কোর্সে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। মোট খরচ হবে এক লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় মোট ৬১টি বেসরকারি হোমিওপ্যাথি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজে ডিপ্লোমা কোর্সে পড়ার সুযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ৬১টি কলেজে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিলম্ব ফি ছাড়া ভর্তি হওয়া যাবে। চার বছরে খরচ পড়বে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা।
ডিএইচএমএস পাস করা ডাক্তারদের জন্য রয়েছে এক বছর মেয়াদী পোস্ট ডিপ্লোমা ট্রেনিং-ইন-হোমিওপ্যাথ কোর্স। শুধু বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এই কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। এক বছরে খরচ হবে ২০ হাজার টাকা।
কলেজের তালিকা পাওয়া যাবে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের ওয়েবসাইটে (https://www.homoeopathicboardbd.org) ও লিংকে।
বিনিয়োগ ও চেম্বার দেওয়ার প্রক্রিয়া
নিজেই চেম্বার দিয়ে বসতে চাইলে নিতে হবে রেজিস্ট্রেশন। সে ক্ষেত্রে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এবং ডিপ্লোমাধারীদের বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড থেকে রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। চেম্বার দেওয়ার আগে খেয়াল রাখতে হবে চেম্বারের লোকেশনের বিষয়টা। শহরের বিপণিবিতান, বাজার বা বন্দরে বেশি দেখা যায় হোমিও ঔষধের দোকান বা চেম্বার। মানিকগঞ্জের খান কম্পিউটারাইজড হোমিও হলের স্বত্বাধিকারী ডা. মো. আব্দুল আহাদ খান জানান, চেম্বার এমন স্থানে দিতে হবে যেখানে লোক সমাগম বেশি হয়। সহজে যাতায়াত করা যায়। বিনিয়োগটা নির্ভর করে লোকেশনের ওপর। শহরের কোনো ভাল স্থানে দোকান নিলে খরচের অংকটা বেশি হতে পারে। মফস্বল শহরে অবস্থান বুঝে ১ থেকে ৩ লাখ টাকার মধ্যেই সম্ভব।
নিজের চেম্বার খোলার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানান, দোকান নেওয়ার অগ্রিম টাকা, ঔষধ রাখার শেলফ ও ঔষধ কেনাতেই মূলত বেশি টাকা খরচ করতে হয় চেম্বার দেওয়ার পেছনে। সাধারণত হোমিও চিকিত্করা রোগীর ব্যবস্থাপত্রের জন্য কোন ভিজিট নেন না। ভালোমানের ঔষধ রাখতে পারলে এবং ভাল সেবা দিতে পারলে ঔষধের দাম থেকেই ভালো আয় হতে পারে। ডা. মো. আব্দুল আহাদ খানের পরার্মশ, শুরুতে প্রাকটিস শুরু না করে অভিজ্ঞ কোনো হোমিও চিকিত্সকের চেম্বারে বসে অভিজ্ঞতা নেওয়াটা খুবই জরুরি। এতে চেম্বার বা ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার বিষয়ে অনেক কিছু শেখা যাবে। জেনে-বুঝে ও অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজের চেম্বার শুরু করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সুযোগ আছে মেডিকেল অফিসার হওয়ার
ছয় বছর মেয়াদী হোমিও ডিগ্রি নেওয়ার পর সরকারের অলটারনেটিভ মেডিক্যাল কেয়ার প্রকল্পে মেডিক্যাল অফিসার হওয়ার সুযোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হোমিও ও ট্রেডিশনাল মেডিসিন বিভাগের পরিচালক ডা. মনোয়ারা সুলতানা জানান, অলটারনেটিভ মেডিক্যাল কেয়ার প্রকল্পে সরকার হোমিও মেডিক্যাল অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে। প্রকল্পটি শুরু হয় ২০০৩ সালে। ২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ রয়েছে। পরবর্তীতে আবার ৫ বছরের জন্য বাড়তে পারে এ প্রকল্পের মেয়াদ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৭২ জন মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছে। এর মধ্যে সরকার ধাপে ধাপে মোট ১৪ জনকে রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণ করেছে। একজন হোমিও মেডিকেল অফিসারকে জেলা, উপজেলা সদর হাসপাতালে পদায়ন করা হয়। প্রকল্পের নিয়মে একজন হোমিও মেডিকেল অফিসার সর্বসাকূল্যে ২২০০০ টাকা বেতন পেয়ে থাকে। তবে রাজস্ব খাতে নেওয়ার পর তারা সরকারের নির্ধারিত বেতন স্কেলে বেতনভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ ছাড়াও তাঁরা পরবর্তীতে উচ্চতর পদে পদায়নের সুযোগ পাবেন।
কাজের সুযোগ ও আয়-রোজগার
ডা. মো. আব্দুল আহাদ খান জানান, হোমিও বিষয়ে স্নাতক বা ডিপ্লোমা কোর্স শেষে কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে। রোগীরা ভালো সেবা পেলে রোগীর পাশাপাশি বাড়বে আয়ের পরিমাণ। ভালোমানের ওষুধ রাখতে হবে। প্রাথমিকভাবে একজন হোমিও ডাক্তার রোগী দেখে ও ওষুধ বিক্রি করে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। পরিচিতি বাড়লে বাড়বে আয়ও। নামকরা ডাক্তার হিসেবে পরিচিত হয়ে গেলে মাসিক আয় লাখের বেশিও হতে পারে।
তিনি আরো জানান, দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় হোমিও কলেজ আছে ও নতুন তৈরি হচ্ছে। সেখানেও শিক্ষক হিসেবে কাজের সুযোগ আছে। এ ছাড়া সরকার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রকল্পে হোমিও ডাক্তার নিয়োগ দিচ্ছে।ভালো আয়ের পথ হতে পারে হোমিওপ্যাথি
দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় অ্যালোপ্যাথিক ডাক্তারের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। সে ক্ষেত্রে হোমিও ডাক্তাররা এই শূন্যতা কিছুটা হলেও পূরণ করছেন। এসএসসি বা এইচএসসি পাস করে যে কেউ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স শেষ করে হোমিও ডাক্তার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। এ ছাড়া এইচএসসি পাস করা নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য ছয় বছর মেয়াদি স্নাতক র্কোস রয়েছে, যা এমবিবিএস সমমানের। ভালো আয়ের পথ হতে পারে হোমিওপ্যাথি।
ভর্তি চলিতেছে
*****************************
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
==============================
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
কোর্সের নাম মেয়াদ
ডি.এইচ.এম.এস (ডিপ্লোমা) ৪ বৎসর + ৬ মাস ইন্টার্নী
ভর্তির যোগ্যতা
****************
• ডি.এইচ.এম.এস (ডিপ্লোমা): যে কোন বিভাগ থেকে যে কোন সনে এস.এস.সি পাশ।
ভর্তির সময় ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
***********************************
• ডি.এইচ.এম.এস কোর্সে প্রতি বছর জুন মাসে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এস.এস.সি পরীক্ষার মার্কশীটের সত্যায়িত ফটোকপি, নাগরিক ও চারিত্রিক সার্টিফিকেট ও চার কপি রঙ্গীন সত্যায়িত ছবি।
সার্টিফিকেট
****************
• ডি.এইচ.এম.এস কোর্স শেষে বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্নের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
★যোগাযোগ ★
প্রভাষক ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,শপথ চত্বর,কালী বাড়ী মোড়
(হাকিম প্লাজার পশ্চিম পার্শ্বে,গ্রামীন ফোন সেন্টারের পিছনে)
মোবাইল নাম্বার: 01711-943435 // 01919-943435
ই-মেইল: dr.zaman.polash@gmail.com
ওয়েবসাইটঃ www.zamanhomeo.com