প্রতিনিধি=
ফরিদগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে যুবদলের তিন নেতা-কর্মীও পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামী হলেন। এ নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলের মধ্যে চলছে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ। এক পৰ আরেক পৰকে দুষলেও মূলত এখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ন্যায় চলছে বিভিন্ন তৎপরতা। মূলত কার গুলিতে ওই তিন যুবক নিহত হয়েছে এ বিষয়টি আড়াল করার জন্য চলছে বিভিন্ন অপতৎপরতা।
ফরিদগঞ্জের এমপি লায়ন হারুনুর রশিদ মূলত কার গুলিতে যুবদলের তিন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে সেই ঘটনা তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের বিৰোভ মিছিলকে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিতে যুবদলের তিন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর ওই রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মোট ৪টি মামলা দায়ের করে। এসব মামলার মধ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা একটি মামলায় আসামী হলেন নিহত ওই তিন যুবক উক্ত মামলায় জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ১নং সদস্য জয়নাল আবেদীনকে প্রধান আসামী করে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে নিহত তিন যুবক রয়েছে। ১২নং ক্রমিকে রয়েছে বারপাইকা গ্রামের নিহত যুবক আরিফ হোসেন, ১৩নং ক্রমিকে গাজীপুরের নিহত যুবক জাহাঙ্গীর ও ১৪ নং ক্রমিকে বদরপুরের নিহত যুবক বাবুল ।
ফরিদগঞ্জে ২৫ অক্টোবরের ট্রাজেডির দিন রাতে থানা পুলিশের দায়ের করা মামলার নথিপত্রের সূত্রে মতে জানা যায় (এজাহারের ভাষায়), ১৮ দলীয় জোটের বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের দুই-আড়াই হাজার নেতা-কর্মী মিলিত হয়ে মিছিল বের করে। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো বিভিন্ন অস্ত্র, ককটেল, ইটপাটকেল, লাঠিসোটা, বোতল ইত্যাদি নিয়ে মিছিল করতে করতে ওই দিন বিকেলে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে হাজির হয়। এ মিছিলের পাশে প্রায় ১০-১৫ গজ দূরে ১৪ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে মিছিলকারীরা তাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যাযে মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে ককটেল, বোতল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে তখন ত্রিমুখী সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তখন ফরিদগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট) সাহেদুল ইসলামের নির্দেশে প্রথমে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
পুলিশের দেয়া পরিসংখ্যান মতে, ওইদিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেদুল ইসলামের নির্দেশক্রমে ১১টি টিয়ার টিয়ারশেল, ২৪২টি শর্টগানের কার্তুজ ও ২৯ রাউন্ড চায়না রাইফেলের ফাঁকা গুলি ফায়ার করা হয়। ওই সংঘর্ষে যুবদলের তিন নেতা-কমী মারা যাওয়ার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত হয়ে তাদের এজাহারে উল্লেখ করলেও ওই তিন নিহত যুবককে আসামী করা নিয়ে বিএনপির দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে।