চাঁদপুর প্রতিনিধি :১৮ দলের ডাকা হরতাল ও অবরোধের প্রভাবে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম চড়া। সবজি থেকে শুরু করে মাছ মাংস,ডাল ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে আরেক ধাপ।
বুধবার নগরীর কারওয়ানবাজার, মগবাজার, সেগুনবাগিচা ও মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা দরে।
প্রতিকেজি পেঁপে ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, মূলা ২৫ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বেগুন প্রকারভেদে ৩৫ থেকে ৪০ টকা, চিচিঙা ৫০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০ টাকা, ওলকপি ৩৫ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ঢ্যাড়স ৫০ টাকা, সিম ৩৫ টাকা, শসা ৩৫-৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, নতুন আলু ৩৫ টাকা এবং পুরান আলু ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দাম বেড়েছে ফুলকপি আর বাঁধাকপিরও। ৭০০শ’ গ্রাম ওজনের একটি ফুলকপি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে। প্রতিটা লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে।
সবজির দাম বাড়া প্রসঙ্গে গৃহিনী তাজনারা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, “যে দেশে একটা ফুলকপির দাম ৫০ টাকা হতে পারে সেই দেশে আমাগোর মতো মানুষের খাওন নাই। খাওন শুধু বাড়িয়ালা আর বড় লোকদের।”
তিনি বলেন, “প্রতি সপ্তাহে এভাবে যদি সব জিনিসের দাম বাড়ে তাহলে বাজারে আসা আমাগোর জন্য বন্ধ হয়ে যাবে।”
এদিকে পেঁয়াজের ঝঁজ বেড়েই চলেছে। দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা করে বেড়েছে ।
বিক্রেতারা বলছেন নতুন পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে না ওঠা পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকবে।
রাজধানীর কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৬২-৬৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ও ভারতীয় আমদানি নির্ভর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকা দরে।
বুধবার কারওয়ানবাজারেও দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। দাম বেড়েছে শ্যামবাজারেও ।
গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন ১৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি।
সঙ্গে বেড়েছে সব ধরনের ডিমের দামও। প্রতিহালি দেশি মুরগির ডিম ৪০-৪২ টাকা , হাঁস ৪০-৪২ টাকা, ফার্মের সাদা মুরগির ডিম হালি ৩৫-৩৬ টাকা ও লাল ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকায়।
ইলিশ ব্যতীত সব ধরনের ছোট ও বড় মাছের দাম বাড়তির দিকে। বিক্রেতারা বলছেন, ঘন ঘন হরতালের কারণে অনেকে রাস্তায় যানবাহন বের করতে চাননা। বের করলে আবার ভাড়া বেশি। যার কারণে বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে।
প্রতি কেজি পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ১১০-২০ টাকায়, কই ১৮০-২০০ টাকায়, রুই ১৮০ টাকায়, শোল মাছ ৩০০ টাকায়, শিং প্রকারভেদে ৪০০-৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৩০ টাকায় ও কাতলা প্রকারভেদে ২২০-২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ছোট মাছের দামও বাড়তির পথে, প্রতিকেজি ট্যাংরা ২৫০ টাকা, মেনি ২৫০ টাকা, কাচকি ১২০ টাকা, মলা ১২০-৩০ টাকা, পাঁচ মিশালি মাছ ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে ইলিশ মাছের দাম কমেছে। ৬০০শ’ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে।
তবে চাল, তেল ও চিনির দাম স্থিতিশীল আছে। প্রতিকেজি মিনিকেট স্ট্যান্ডার্ড ৪০ টাকা ও প্রিমিয়াম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা দরে ।
এছাড়া লতা ৩৪ টাকা, স্বর্ণা ৩০ টাকা ও ভাল মানের নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা দরে। প্রতিলিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩৪ টাকা ও বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৬৬০ টাকা দরে। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে।
আটা ও ময়দার দামও বাড়তির পথে। দুই কেজি ওজনের প্যাকেটজাত ময়দা ৯২ টাকা ও আটা বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা দরে।
বেড়েছে মশুরসহ সব ধরনের ডালের দাম। প্রতিকেজি নেপালি ও ছোট দানার মশুরডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-৪০ টাকা ও মোটা দানার মশুরডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া প্রতিকেজি বুট ১০০ টাকা, মুগ ১১৫-২০ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা ও মটরডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে।
চায়না ও দেশি রসুনের দাম কমেছে। প্রতিকেজি চায়না রসুন ৮০ টাকা ও দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় এছাড়া ভারতীয় আদা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।