শাহারিয়ার খান কৌশিক ॥
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৩ নং হানারচর ইউনিয়নের হরিনা ফেরীঘাটে নন্দীগো দোকান ও রাঢ়ীকান্দি এলাকায় ঝাটকা নিধন অভিযান চলাকালীন সময়ে জেলা ট্রাস্কফোর্সের উপর হামলা চালিয়েছে জেলেরা। মার্চ-এপ্রিল ২ মাস অভয়াশ্রম চলাকালীন সময় মেঘনা ও পদ্মা নদীতে জেলেরা জাটকা নিধন করেই যাচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই নদী তীরবর্তী এলাকায় জেলেরা নৌকা নিয়ে অবস্থান করে মাঝ নদীতে জাল ফেলে জাটকা নিধন করছে। জাটকা নিধন বন্ধের লক্ষে জেলা ট্রাস্কফোর্স প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার রাত ৮ টায় থেকে রাত সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত অভিযানকালে হরিনায় নৌ পুলিশ ও কোষ্টর্গাডকে লক্ষ করে জেলেরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। অল্পের জন্য বড় ধরনের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় জেলা ট্রাস্কফোর্স। জানা যায়, জেলা প্রশাসক আব্দুর সবুর মন্ডলের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজেষ্টেট লিটুস লরেঞ্জ চিরান ও রাশেদ মোঃ কামালের নেতৃত্বে কোষ্টর্গাড, নৌ পুলিশকে নিয়ে নদীতে অভিযান চালায়। রাত সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলার ১৩নং হানারচর ইউনিয়নের হরিনা রাঢ়ীকান্দি এলাকায় অভিযানকালে প্রায় ৪০/৫০ টি নৌকা নিয়ে জেলেরা সংঘবদ্ধ হয়ে মেঘনা নদীতে ট্রাস্কফোর্সকে লক্ষ করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। বড় ধরনের দূর্ঘটনা হওয়ার আশংকা ভেবে নির্বাহী ম্যাজেষ্টেট লিটুস লরেঞ্জ চিরান নৌ পুলিশকে ঘটনাস্থল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের মধ্যে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শনিবার রাতে নদীতে অভিযান চালিয়ে কোষ্টগার্ড ৩ জেলেকে আটক করে। জেলা ট্রাস্কফোর্সের উপর হামলার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজেষ্টেট আবদুল সাদিত লাইনের পুলিশ নিয়ে গাড়ি যোগে হরিনায় গিয়ে অভিযান করে। এসময় জেলেরা আবারো হামলার চেষ্টা করে। পুলিশ নন্দীগো দোকান এলাকায় নদীর পাড়ে ১১ টি নৌকা পুরিয়ে দিয়েছে বলে জেলেরা জানায়। এদিকে অভয়াশ্রমের শুরু থেকেই আনন্দবাজার, রনাঘোয়াল, দোকানঘর, বহরিয়া, লক্ষীপুর,হরিনা, আখন্দঘাট ও চরাঞ্চলগুলোতে জেলেরা দেদারছে নিধন করছে ঝাটকা ইলিশ। চাঁদপুরের সহকারী মৎস কর্মকর্তা ফিরোজ আলমের সাথে নৌকা প্রতি কন্ট্রাকের মাধ্যমে জাটকা শিকাড় ও বিক্রি করে আসছে। এছাড়া নৌ পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজেস করে চলছে এ ঝাটকা নিধনের মহোৎসব।
এনিয়ে ২ দফা হরিনা ঘাটের জেলেরা জেলা ট্রাস্কফোর্স ও পুলিশকে লক্ষ করে হামলা চালায়। এর পূর্বে মডেল থানা পুলিশকে লক্ষ করে হামলা চালালে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ১১ রাউন্ড গুলি বর্ষন করে। ঐ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৯১ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। জানা গেছে, হরিনা ফেরিঘাট এলাকার একটি সংঘবদ্ধ দল নদীতে ডাকাতিসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। অভয়াশ্রম আসলেই অবৈধভাবে ঝাটকা নিধনে এ দলটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রতিদিন আখন্দঘাট,নন্দীগো দোকান, আনন্দবাজার এলাকায় ও চরাঞ্চলগুলোতে লক্ষ লক্ষ টাকার ঝাটকা বেচাকেনা হচ্ছে। শনিবার ভোড়ে হরিনা নন্দীগো দোকান থেকে ঢাকা মেট্রো-ম-১১৫৫৩৪ একটি মিনি কাভার্ড ভ্যানে ২০ মন ঝাটকা মাছ নিয়ে যাওয়ার সময় নতুন বাজার পুলিশ ফাড়ির এটিএসআই সুদর্শন কুড়ি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আটক করেন। এ সময় মালের মূল মালিককে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দেড় বছরের সাজা প্রদান করে। তারপরও বন্ধ হয়নি ঝাটকা নিধন ক্রয় ও বিক্রয়।