হাইমচর : হাইমচরের ৮ হাজার সয়াবিন চাষীর প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন সয়াবিন মহাসেন ও পরবর্তী টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন চাষীরা। এর মধ্যে জমিতে জলাবদ্ধতায় পচে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার সয়াবিন। বাকি ২৫ কোটি টাকার সয়াবিন মাঠ থেকে ঘরে তোলার প্রস্ততিকালে মহাসেন ও পরবর্তী টানা বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। ভয়াবহ এ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ৬ হাজার কৃষক ও সংশ্লিষ্ট ২ হাজার কৃষকসহ সর্বমোট ৮ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হাইমচরের কৃষকের জন্য সরকারি বেসরকারি কোনো সহায়তা নেই।
উপজেলা অতিরিক্তি কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, হাইমচরে প্রায় ৪ হাজার একর জমিতে উৎপাদিত (একরে ১.৫০০ মে. টন হারে) ৬০ হাজার মে. টন সয়াবিন নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে জমিতে পানিতে ডুবেছে ৫শ’ একর জমির ১ কোটি টাকার ফসল। সবমিলিয়ে ৪ হাজার একর সয়াবিনে আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে বেসরকারি হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা হতে পারে। তিনি আরো জানান, উপজেলায় ২ হাজার একর জমিতে চাষকৃত মরিচের মধ্যে ৬২৫ একর জমির ৫০ লাখ টাকা মূল্যেন মরিচ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। বোরো ফসলে ১২ লাখ টাকার ধান এবং ৫শ’ একর সবজি চাষের মধ্যে ২৫০ একর সবজি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এসকল ফসলের ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে।
মহাসেন ও বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। গত মে ২০১৩ইং মাসের উপজেলা মাসিক উন্নয়ন সভায় কৃষি বিভাগের ক্ষয়ক্ষতি হিসাব প্রত্যাখ্যান করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। তাদের দাবি ক্ষতির পরিমাণ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। হাইমচরের নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন রতন জানান, নীলকমলের ঈশানবাল, মধ্যচরের মিয়ার বাজার, চরকাশেম, নিউচর, বাংলাবাজারসহ তার এলাকায় ৪/৫ হাজার একর জমিতে চাষকৃত সয়াবিন ৯০ ভাগ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে কৃষকরা আজ সর্বস্বান্ত। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পুনর্বাসনের সহায়তা দাবি করেছেন।
নীলকমলের চরকাশেম এলাকার সানাউল্যাহ পেধা, মিনু, নান্নু শিকদার, হানিফা শিকদার, আবুল, লিটন খাঁ, হযরত আলী, অব্বাস দেওয়ান, হানিফা মল্লিকরা জানান, তারা সুদে টাকা নিয়ে ফসল উৎপাদন করে ঘরে তোলার সময় সব ফসল পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা ১৪০ টাকা দরে বীজ সয়াবিন ক্রয় করে ক্ষেতে হাজার হাজার টাকা খরচ করে ফসল উৎপাদন করে এখন কিছু¦ই পেলাম না । সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছি, সরকারি সহায়তা না পেলে মহাজনের দেনা পরিশোধ ছাড়াই সামনের ফসল বুনতে মাঠে যেতে পারব না।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ২১ মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।