হাইমচর প্রতিনিধি
হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী (এস.এ.সি.এমও) হৃদয় কৃষ্ণ বণিক এক মুমূর্ষু রোগীর ঔষধ চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। সে রোগীর শরীরে ব্যথানাশক টোরাক্স ইনজেকশান পুশ না করে পকেটে রেখে হাসপাতালের নিম্ন মানের ইনজেকশান পুশ করার বিষয়টি রোগীর আত্মীয়দের নিকট ধরা পড়ে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ নিয়ে ওই রোগী মোঃ তসলিম গাজী চাঁদপুর সিভিল সার্জন বরাবর অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী (এস.এ.সি.এমও) হৃদয় কৃষ্ণ বণিক দীর্ঘ দিন হতে হাসপাতালের মূল্যবান ঔষধ কালো বাজারে বিক্রি, রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ঔষধ চুরি ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে নিরীহ ও গরিব রোগীদের ভর্তি হতে বাধ্য করা এবং জরুরি বিভাগে রোগীদের থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত রয়েছে। গতকাল ১০ জুলাই দুপুর আড়াইটায় হাইমচর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক মোঃ তসলিম গাজী গাছ থেকে পড়ে হাত ভেঙ্গে গিয়ে জরুরি বিভাগে আসেন চিকিৎসা নিতে। জরুরি বিভাগে কর্মরত হৃদয় কৃষ্ণ বণিক তাকে বাহির হতে টোরাক্স-৬০ ইনজেকশান আনার জন্য ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে দেন। তার ভাতিজা ইনজেকশানটি এনে তাকে দিলে ঐ ইনজেকশনটি হৃদয় কৃষ্ণ পকেটে ভরে রোগীকে হাসপাতালে সরবরাহ করা নিম্ন মানের একটি ইনজেকশান পুশ করে। বিষয়টি রোগীর এক আত্মীয় টের পেয়ে ময়লা ফেলার ঝুড়ি থেকে ইনজেকশানের খোশা উদ্ধার করে এবং লোকজন জড়ো হয়ে তার পকেট থেকে রোগীর কেনা টোরাক্স ইনজেকশনটিও উদ্ধার করে। এ নিয়ে উত্তেজিত জনতা হৃদয় কৃষ্ণ বণিককে লাঞ্ছিত করে। এ সম্পর্কে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য সহকারী হৃদয় কৃষ্ণ বণিক জড়ো হওয়া শত শত উত্তেজিত জনতার সামনে তার এ অপকর্মের কথা স্বীকার করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ আঞ্জুম আরা পেন্সি বলেন, হৃদয় কৃষ্ণ বণিকের ঘটনাটি রোগীর লোকজন হাতেনাতে ধরে ফেলেছে আমিও এসে দেখেছি। আমি তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা বলেছি। এ সম্পর্কে স্থানীয় এমএ বাসার, মাহবুব আলম সুমন, দেলোয়ার হোসেন বেপারী, হান্নান মিয়া, মজিবুর রহমানসহ অনেকই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হৃদয় কৃষ্ণ বণিকক খুব ক্ষমতাধর। সে ইতিপূর্বে অনেক অপকর্ম করে পার পেয়ে গেছে তার কিছুই হবে না। বিষয়টি জানাজানি হয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।