প্রতিনিধি
হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের শ্রীপুরে মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাড়ি ভাংচুর, দেবপুর ও শ্রীপুরের মধ্যে থেমে থেমে মারামারি, বেশ কয়েক ব্যক্তি আহত ও সর্বশেষ এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এমনকি একই বিষয় নিয়ে দেবপুর-রাজারগাঁও-মেনাপুর সড়কে প্রায় ১২ ঘণ্টা সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিলো। আর ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরের দিন শনিবার সকাল পর্যন্ত। এর মধ্যে শ্রীপুরের ২জন মারাত্মক আহত হয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আর এ ঘটনায় পরস্পর পরস্পরকে দায়ী করছে।
সরজমিনে গতকাল দক্ষিণ শ্রীপুর নূরানী তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা মাঠে গেলে কথা হয় একই মাদ্রাসার শিক্ষক আল আমিন ও স্থানীয় মিজি বাড়ির আনোয়ারের সাথে। তারা বলেন, প্রায় ৭/৮ মাস আগে আমাদের বড় হুজুর (মাদ্রাসার অধ্যক্ষ) নূর উদ্দিনের একটি মোবাইল মাদ্রাসা থেকে খোয়া যায়। সম্প্রতি মোবাইলটির সন্ধান মিলে। এতে মোবাইল চোর হিসেবে শনাক্ত হয় মাদ্রাসা সংলগ্ন বাড়ির হেদায়েত উল্লা মিজির ছোট ছেলে ইসমাইল। ভাইয়ের উপর মোবাইল চুরির অভিযোগ দেয়ার কারণে ইসমাইলের ভাই সোহাগ দেবপুর এলাকার তার বন্ধুদের খবর দিয়ে এনে মাদ্রাসা ভাংচুর করে। তারা মাদ্রাসার বেড়া এবং মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি চায়ের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এর কিছু পরে পার্শ্ববর্তী ঈদগাহ মাঠে লোকের সমাগম দেখে এগিয়ে যান স্থানীয় দক্ষিণ শ্রীপুর মিজি বাড়ির শাহজাহান মিজির ছেলে ইমাম হোসেন (২০) ও শহীদ উল্লাহর ছেলে মোবারক হোসেন (৩৫)। এরা ঈদগাহ মাঠে এগিয়ে যেতেই দেবপুর এলাকার ছেলেরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এরপরই দেবপুর ও শ্রীপুরের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন শ্রীপুরের ইমাম ও মোবারক জানান, ঈদগাহ মাঠে যেতেই আমাদের সাবেক ইউপি মেম্বার মমিন বেপারী চোখ রাঙ্গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বলেন। এর পরেই তার নির্দেশে দেবপুরের ছেলেরা আমাদের উপর আক্রমণ চালায়।
শ্রীপুর মাদ্রাসা ভাংচুরের ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ শনিবার হাজীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন ঐ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুর উদ্দিন। এতে হেদায়েত উল্লা, তার ছেলে খোরশেদ, সোহাগ এবং সাবেক ইউপি সদস্য মমিন বেপারীসহ ৭ জনের নামে ও অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
একই ঘটনায় দেবপুর রাজারগাঁও সড়কের সিএনজি স্কুটার চালক দেবপুর এলাকার রাজু বেপারী, স্কুটার মালিক জাহাঙ্গীরসহ অন্যরা জানান, অবরোধের কথা বলে শ্রীপুরের বেশ কিছু লোক শ্রীপুর দিয়ে সিএনজি স্কুটার চালানো যাবে না বলে শুক্রবার রাতে আমাদেরকে মারধর করে ও বেশ কিছু সিএনজি স্কুটার ভাংচুর চালায়। এ কারণে আজ শনিবার আমরা এ সড়কে গাড়ি চালাই না।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম এলএলবি জানান, শ্রীপুরের মাদ্রাসা থেকে যে অভিযোগটি দেয়া হয়েছে তা আমরা মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্তি করে নিয়েছি।