সাখাওয়াত হোসেন মিথুনঃ
হাজীগঞ্জ উপজেলায় নেশাজাত দ্রব্য হিসেবে প্রিয় হয়ে উঠেছে সিনামিন, ফেনারগান, আলকফ ও ডেঙ্পোটেনসহ বেশকয়েকটি কাশির ঔষধ। যার ফলে ধ্বংস হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রসহ যুবসমাজ। ঔষধ ব্যবসায়িদের লাভজনক মনোভাব ও প্রশাসনের নিরবতাকে কাশির ঔষধ সেবনের জন্য দায়ি করছে সচেতন মহল। অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা সদর ও ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন ঔষধের দোকানে সিনামিন,তুসকা, ফেনারগান, আলকফ ও ডেঙ্পোটেনসহ বেশ কয়েকটি কাশির ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে। এই কাশির ঔষধ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে নেশাজাতদ্রব্য হিসেবে। বিক্রির ক্ষেত্রে বাধা নিষেধ থাকলেও কোনো নিয়ম মানছে না ঔষধ ব্যবসায়ীরা। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রি নিষেধ হলেও ব্যবসায়ীরা অধিক দামে যুব সমাজ ও ছাত্রদের কাছে বিক্রি করে। বাজারে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঔষধ কোম্পানী এর সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যার পরে হাটে-বাজারে, অলি-গলিতে, নির্জন জায়গায় বসে সংঘবদ্ধভাবে দেদারসে খাচ্ছে কাশির ঔষধ। প্রশাসন এ ব্যাপারে উদাসীন। পৌর এলাকার কয়েকটি বড় বড় ঔষধের দোকানের সামনে অবস্থান করে দেখা যায়, ১ থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যে ৩০/৪০ জন উঠতি যুবক যাদের বয়স ১৩-২৬ তারা চিকিৎসকের কোন ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই কাশির ঔষধ নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে উপজেলা পোস্ট অফিস, অডিটোরিয়াম ভবন, পৌর মার্কেটে বসেও কাশির ঔষধ এর সাথে টাইগার, স্পীট জাতীয় কেমল পানিয় মিশিয়ে সেবন করা হয়। ঔষধ সেবনকারী একজন জানান, হাতের কাছে সহজে পাওয়া যায়। কেউ সন্দেহ করে না। এটি খাইলে রাতে ভাল ঘুম হয় এবং মজাটা বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঔষধ ব্যাবসায়ী জানান, সবাই বিক্রি করে তাই আমিও বাজার ধরে রাখার জন্য বিক্রি করি। সংস্কৃতিকর্মী বি এ কে মামুন জানান, যেভাবে নেশার দিকে ছাত্র ও যুব সমাজ ঝুঁকছে এবং প্রশাসনের যে উদাসীনতা তাতে মাদকের ব্যাপকতা দিন দিন বাড়ছে। সহজে হাতের কাছে পাওয়ায় যুব সমাজ ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। হাজীগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, কাশির ঔষধ দিয়ে যুবকরা নেশা করে শুনেছি, আমরা এমন অভিযোগ পেলে ফার্মেসি মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সাহেব জানান, সব ফার্মেসিতেই এটা পাওয়া যায়। আমরা তো আর এটার জন্য পাহারা বসাতে পারি না। তবে ঔষধ বিক্রেতাদের উচিৎ ব্যবস্থাপত্র দেখে ঔষধ দেওয়া। জেলা ড্রাগ সুপারেন্টেন্ডেন্ট জানান, ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঔষধ বিক্রি করার নিয়ম নেই। আমরা মাঝে মাঝে অভিযান চালাই। যারা নেশা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ৪ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ১৯ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।