হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল গ্রামে এক রিক্সাচালকের বসতঘর বিক্রি করে দিয়েছেন শক্তি ফাউন্ডেশনের ক্রেডিট অফিসার হাবিবুর রহমান অপু। এখন ওই রিক্সাচালক পরিবার পরিজন নিয়ে তার ভাইয়ের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। ভুক্তভোগী রিক্সা চালক শাহজাহানের বাড়ি হাজীগঞ্জের মধ্য বড়কুল গ্রামে।
জানা গেছে, শাহজাহানের স্ত্রী আলেয়া আক্তার গত বছরের ১৯ মার্চ ‘শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিস এ্যাডভান্টেজড উইমেন’ নামে একটি এনজিও থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। প্রতি কিস্তি আড়াইশ টাকা হারে ৪৮ কিস্তিতে ওই টাকা পরিশোধ করার কথা। ইতিমধ্যে ২৮ কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি ২০ কিস্তির ৪৮শ’ টাকা পরিশোধ করা হয়নি।
আলেয়া আক্তার জানান, তাদের গ্রামে সমিতির সদস্য সংখ্যা ১৫ জন। আমি এবং আমার স্বামী অসুস্থ থাকায় দু মাস বাবার বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। দু মাস পর বাড়ি এসে জানতে পারি ঋণ আদায়কারী হাবিব স্যার সমিতির অপর সদস্য আমেনা আক্তারের কাছে ১০ হাজার টাকায় আমার ঘর বিক্রি করেছেন।
আমেনা জানান, ১৩ ফেব্র�য়ারি তিনি টাকা পরিশোধ করে ঘর খুলে আনেন। কিস্তির ৪৮শ’ টাকা পরিশোধের পর বাকি টাকা এলাকার মকবুল হোসেন নিয়ে গেছেন। তিনি ওই টাকা খরচ করে ফেলেছেন। তবে মকবুল দাবি করেন, তিনি আলেয়ার স্বামী শাহজাহানের কাছে পাওনা বাবদ ওই টাকা কেটে রেখেছেন।
এদিকে এ ঘটনায় এনজিও অফিসার হাবিবুর রহমান অপুকে নীলফামারী সদর শাখায় বদলি করা হয়েছে। হাবিবুর রহমান জানান, ঘর বিক্রির আলোচনা চলাকালীন এলাকার মকবুল ও কাউছার অতি উৎসাহী হয়ে ঘর বিক্রি করেছেন। এতে আমার কোনো দোষ নেই। আমি শুধু ১০০ টাকার একটি স্ট্যাম্প তৈরি করে দিয়েছি।
শক্তি ফাউন্ডেশনের হাজীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার আবু শাহিন মুসা জানান, সমস্যাটি সমাধানের জন্য আলেয়াকে পুনরায় ১০ হাজার টাকা ঋণ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে রাজি হয়নি। আমেনা টাকা পেলে ঘর ফেরৎ দিতে রাজি আছেন। ম্যানেজার আরো জানান, প্রধান কার্যালয়ে ঘটনাটি জানার পর ৪ মার্চ ওই অফিসারকে নীলফামারী সদর শাখায় বদলি করা হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী বাড়ির দলিলুর রহমান বলেন, যতো টাকাই পাওনা থাকুক, একজনের মাথা গোঁজার ঠাঁই বসতঘর বিক্রি করে টাকা নেয়া অন্যায় হয়েছে। ইউপি মেম্বার শাহাদাত হোসেন মিলন বলেন, ঘর খুলে নেয়ার পর বিষয়টি আমি জেনেছি।
আলেয়ার চার মেয়ে সন্তান রয়েছে। তিন মেয়ে স্কুলে পড়ে।