চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট
দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রী মায়া আক্তার আমেনা (২০) ও শাশুড়ি সাজুদা বেগম (৪০)কে মারধর করেছে জামাতা। বর্তমান মা-মেয়ে উভয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েচিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর আমেনার কোলের দেড় বছরের শিশু মাহিকে আটকে রাখা হয়েছে মাহির দাদার পরিবার। অমানবিক এ ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার বিকেলে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯নং গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের কাঁকৈরতলা গ্রামের দিহীদার বাড়িতে।
জানা যায়, গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের কাঁকৈরতলা গ্রামের দিহীদার বাড়িটিতে বেশ কটি পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে একটি পুরাতন দিহীদার বাড়ি আরেকটি নতুন দিহীদার বাড়ি। গত কয়েক বছর আগে নতুন দিহীদার বাড়ির আনা মিয়ার ছেলে আলাউদ্দিনের সাথে বিয়ে হয় পুরাতন দিহীদার বাড়ির ইমাম হোসেনের মেয়ে মায়া আক্তার আমেনার। এই দম্পতির ফাহমিদা আক্তার মাহি (১৮ মাস) নামে এক কন্য সন্তান রয়েছে।
আমেনার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে আলাউদ্দিন প্রায় সময় স্ত্রীকে মারধর করে আসছে যৌতুকের জন্য। এরই মধ্যে সর্বশেষ ৫০ হাজার এবং পরের বার একটি এনজিও থেকে আরো ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে মেয়ের জামাইয়ের হাতে তুলে দেন আমেনার মা-বাবা। আরো টাকার জন্য আমেনাকে সর্বশেষ মারধর করা হয়।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েচিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় আমেনার মা সাজুদা বেগম জানান তাকে নির্যাতনের কথা। তিনি জানান, মেয়ের শ্বশুর বাড়ি আর আমাদের বাড়ি পাশাপাশি। আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দেবার জন্য গত শুক্রবার দুপুরের দিকে জামাই মেয়েকে মারধর করে। এর পরেই বাড়ির সামনে থাকা মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায়কারী মুসলি্লদেরকে ঘটনাটি দেখাই এবং এর বিচার চাই। এর পরেই মুসলি্লদের পরামর্শে মেয়েকে চিকিৎসা করানোর পরে বাড়ি নিয়ে আসি।
অসুস্থ মেয়েকে দেখতে বাড়িতে অনেক লোক আসে। এদিকে মেয়েকে যেন কেউ দেখতে না আসে সে জন্য গালমন্দ শুরু করে অন্য ঘরের ভাসুর (সম্পর্কে ভাসুরের ছেলে) আবু দিদারের ছেলে হাবিব। তখন আমি এগিয়ে গিয়ে গালমন্দের বিষয়টি জানতে চাইলে হাবীব আমাকে প্রচণ্ড মারধর করে। পরে বাড়ির অন্য লোকজন আমাকে আর আমার মেয়েকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েভর্তি করায়। মেয়ের ঘরে দেড় বছরের একমাত্র নাতনিকে তারা (ছেলের পরিবার) আটকে রেখেছে। মেয়েটা হাসপাতালে আর নাতনিটা বাড়িতে কান্নাকাটি করছে। কার কাছে আমি বিচার চাইবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মায়া আক্তার আমেনার সাথে কথা বলতে গেলে বেশি অসুস্থতার জন্য কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মায়া আক্তার আমেনার এলাকার ইউপি সদস্য মোস্তফা মিয়া মা-মেয়েকে জামাতা ও জামাতার আত্মীয়দের মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছোট বাচ্চাটিকে মেয়ের পরিবার নিতে আসলে ছেলেরা দিয়ে দিবে বলে আমাকে বলেছে। আর এ বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে আপোষ করে দেবার জন্য আলোচনা চলছে।