হাজীগঞ্জ:
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে হাজীগঞ্জের সুহিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ চার জনকে ডিঙ্গিয়ে এক কনিষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে অভিভাবক ও এলাকার সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ৩০ জুন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন অবসরগ্রহণ করেন। ২৯ জুন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সভায় জ্যেষ্ঠ ৪ জনকে ডিঙ্গিয়ে কনিষ্ঠ সহকারী শিক্ষক মোঃ জহিরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়।
অভিভাবক ও সুশীল সমাজের অভিযোগ, এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি শুরু হবে এবং এর প্রভাবে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটবে। তারা বিধি মোতাবেক বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে দেখা গেছে যে, সহকারী প্রধান শিক্ষক বা জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব না দিয়ে কনিষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ব্যাহত হয়। ফলে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। এমতাবস্থায় সহকারী প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার অর্পণ করতে হবে। সহকারী প্রধান শিক্ষক না থাকলে জ্যেষ্ঠতম সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, পরিচালনা পর্ষদ যাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছে তার উপরে আরও ৪ জন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক রয়েছে। তাদের অভিযোগ, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ বেশির ভাগ সদস্য আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং জহিরুল ইসলামও সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। যার কারণে সরকারি নীতিমালা লংঘন করে শুধু দলীয় পরিচয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ বিদ্যালয়টিকে ধ্বংসের দিতে নিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহ্ আলী রেজা আশরাফী বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ আবদুল গাফ্ফার বলেন, আমাদের এখানে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে জহিরুল ইসলামের এমপিও সবার আগে হয়েছে। এ কারণে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এখানে দলের কোনো পরিচয় নেই।
জহিরুল ইসলাম বলেন, সুহিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আমিই একমাত্র এলাকার শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানের কল্যাণের স্বার্থে এলাকার ছেলে মনে করে পরিচালনা পর্ষদ আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেন।