প্রতিনিধি
হাজীগঞ্জে ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর নির্মাণ কাজের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে দেড় বছর। কিন্তু ঠিকাদার গত সাড়ে ৩ বছরেও তা শেষ করতে পারেনি। গত ৪ মাস ধরে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে এর নির্মাণ কাজ। আর এ কারণে জনমনে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে আনুষ্ঠানিভাবে এ সেতুটির নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।
হাজীগঞ্জের বলাখাল এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মাণাধীন বলাখাল-রামচন্দ্রপুর সংযোগ সেতুটির নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয় জেলার ফরিদগঞ্জ-হাজীগঞ্জ উপজেলার লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর চলাচল সুবিধার জন্যে। হাজীগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ ডাকাতিয়া নদীর উপর দীর্ঘদিন ধরে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছিল। সে দাবির প্রেক্ষিতে মহাজোট সরকারের স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর এখানে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নির্মাণ ব্যয় ধরেছে ১১ কোটি ৮লাখ ৫০হাজার ৯শ� ৫ টাকা। যার দৈর্ঘ্য হবে ১৮০.৩২ মিটার, প্রস্থ ৮ মিটার। পি এস সি গার্ডারের উপর নির্মিত হবে সেতুটি। এর কাজের মেয়াদ ধরা হয়েছে ৫৫০দিন অর্থাৎ ২১মে ২০১২ তারিখের মধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজটি শেষ করতে হবে। আর ঐ বছরের ৩১ অক্টোবর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পত্র গ্রহণ করে। ডাকাতিয়ার উপর নির্মিত হাজীগঞ্জ অংশে এটি হবে দ্বিতীয় সেতু। প্রথমটি হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার অংশে পড়েছে। যা দিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ তথা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করা হয়।
এ সেতুটির নির্মাণ কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম ইউ (বাসি) ও এম এইচ (জে বি)। লোকসানের আশংকায় ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হতেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এলাকাবাসীর সুবিধার্থে স্থানীয় সাংসদ অসমাপ্ত কাজটি দ্রুত সমাপ্ত করতে নতুন করে প্রায় পৌনে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মূল সেতু ও সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়ক ২টি প্যাকেজ করে পুনঃ টেন্ডার দিয়ে কাজ শুরু করান। তারপর কিছু কাজ হলেও গত ৪ মাস ধরে সেতুর কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে আছে।
সেতুর সংযোগ সড়ক মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করার কথা থাকলেও তা তাড়াতাড়ি চালু করার লক্ষ্যে স্থানীয় সাংসদের হস্তক্ষেপে এর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে অন্য ঠিকাদার। কিন্তু গার্ডার ভেঙ্গে পড়ার পর থেকে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় গুদাড়া ইজারাদার কাশেম ও স্থানীয় আরিফ হোসেন, রিয়াদ আলম ও মিরাজ মুন্সী জানান, গত প্রায় ৪ বছর এ ব্রিজের কাজ শুধু হচ্ছেই হচ্ছে। অথচ এখনো শেষ হওয়ার কোনো খবর নেই। কবে যে কাজ শেষ হবে আল্লাহ-ই জানেন। অথচ এ একটি সেতুর জন্যে লক্ষাধিক মানুষ বিভিন্নভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার সরজমিনে গেলে সেতুর নির্মাণ শ্রমিক খোকন মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, সেতুর গার্ডার বসানোর সময় ক্রেন ছিঁড়ে নিচে পড়ে যায়। ওই সময় এক শ্রমিক নিহত হয়। তারপর থেকে কাজ বন্ধ হয়ে আছে। কবে নাগাদ আবার কাজ শুরু হবে তা আমরা বলতে পারি না।
প্রায় সাড়ে ৩ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো সেতুটির ৪০ শতাংশ কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর এলজিইডি�র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মহসীন উদ্দিন আহমেদ ভূ্ইঁয়া অল্প কথায় বলেন, কাজ হচ্ছে এবং শীঘ্রই শেষ হবে।