সাখাওয়াত হোসেন মিথুনঃ
হাজীগঞ্জে সার নিয়ে চলছে তুঘলকি কারবার। পিক পিরিয়ডে হাতের কাছে ইউরিয়া সার না পেয়ে গ্রামীণ কৃষকদের মধ্যে চলছে হাহাকার। গ্রাম থেকে সার নিতে কৃষকরা ছুটে আসছে উপজেলা সদরে। এদিকে স্থানীয় কৃষি দফতরের কর্মকর্তাদের নির্দেশে সাব ডিলারদের সার সরবরাহ বন্ধ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ সুযোগে সিন্ডিকেটের দখলে চলে গেছে পুরো সার ব্যবসা। স্বনামে, স্ত্রী অথবা পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ৩ থেকে ৪টি লাইসেন্স করে মাত্র ৩ জন সার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। ডিলারদের কাছে চাহিদার পর্যাপ্ত মওজুদ থাকলেও সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগকৃত ডিলাদের অধিকাংশই উপজেলা সদরে বসে সারের ব্যবসা করছেন। হাতেগোনা দুএকজন বাদে ইউনিয়ন পর্যায়ে আদৌ তাদের কোনো হদিস নেই। অভিযোগ রয়েছে, ডিলাররা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই বছরের পর বছর এভাবে উপজেলা সদরে বসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরেজমিন অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্র আরো জানায়, উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ১৭ জন সার ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে মোট ১৫৩ জন সাব ডিলার বা খুচরা বিক্রেতা নিয়োগ করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত উপজেলার সর্বত্র তা করা হয়নি। উপজেলা সদরে বসে মূল ডিলাররাই ব্যবসা চালাচ্ছেন। উপজেলা সদরে অবস্থানরত ডিলাররা বিসিআইসি থেকে ৫০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা ইউরিয়া সার ৫৩৫ টাকায় উত্তোলন করেন। সাব ডিলারদের কাছে তা ৫৮০ টাকায় সরবরাহ করা এবং সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১২ টাকা কেজি দরে সার বিক্রির নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু এ দরে কোথাও সার বিক্রি হচ্ছে না। কয়েকজন সাব ডিলার অভিযোগ করেছেন, মূল ডিলাররা যেখানে প্রতিবস্তায় লাভ করেন ৪৫ টাকা। সেখানে সাব ডিলাররা উপজেলা সদর থেকে প্রত্যন্ত এলাকায় সার এনে মাত্র ২০ টাকা লাভে তাদের পোষায় না। বরং তাতে আরো লোকসান হয়। তারা হিসেব দিয়ে জানান, প্রতি বস্তায় ২ কেজি হারে ঘাটতি বাবদ ২৪ টাকা এবং পরিবহন ব্যয় প্রতি বস্তায় এলাকা ভেদে ১০ থেকে ৩০ টাকা খরচ করতে হয়। এতে প্রতি কেজি সার বিক্রি করতে গিয়ে নিট লোকসান দাঁড়ায় ৫০ টাকারও বেশি। এছাড়া, সাব-ডিলারদের সরকারি কোষাগারে ৩০ হাজার টাকা জমা দিয়ে সার নিতে হয়। যে কারণে সাব ডিলার ব্যবসায় তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এ অবস্থার মধ্যে আবার স্থানীয় কৃষি দফতরের কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশে সাব ডিলারদের সার সরবরাহ বন্ধ করায় পরিস্থিতি আরো জটিল আকার নিয়েছে।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ১৭ জুন, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।