সংবাদদাতা ==
চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে অবরোধের সময় বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। উপজেলা ও জেলা বন অফিসের তত্ত্বাবধানে গত ২ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন হাজীগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম। মামলা নং ০১। এতে ক’ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) কুতুব উদ্দিন। অপরদিকে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের ৩য় দিন গতকাল সোমবার হাজীগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে দিনভর বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীরা।
সম্প্রতি ১৮ দলীয় জোটের ডাকা সকল হরতাল ও অবরোধে ব্যাপক হারে মহাসড়কের বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। এর মধ্যে হাজীগঞ্জ অংশের চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের বাকিলা, কৈয়ারপুল, বলাখাল, দেবপুর ও টোরাগড় এলাকায় ব্যাপক হারে সরকারি গাছ কেটে মহাসড়কে ফেলে রেখে যান চলাচলে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর কারণে উক্ত সড়কে যে সকল ব্যক্তির বনায়ন করেছেন তারা অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সর্বশেষ গত ৩ দিনের অবরোধে হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউপি চেয়ারম্যান কার্যালয়ের সামনে, কৈয়ারপুলের রেল ক্রসিং, বলাখাল পশ্চিম ও পূর্ব বাজার ও টোরাগড় এলাকায় অগণিত গাছ কাটা হয়েছে। আর এভাবে আরো মাসখানেক বৃক্ষ নিধন হতে থাকলে উক্ত সড়কে আর কোনো সরকারি গাছ থাকবে না। তারই আলোকে জেলা বন অফিসের নির্দেশে হাজীগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
উক্ত সড়কের কৈয়ারপুল এলাকার বন বিভাগের উপকারভোগীদের সভাপতি মোঃ সামছুল আলম মামুন জানান, আমরা বহু টাকা খরচ করে বাগানটি করি। এখানে সরকারের অংশ সামান্য আর পুরো অংশটাই আমাদের উপকারভোগীদের। অথচ গাছগুলো কেটে কেটে আমাদেরই ক্ষতি করছে।
বৃক্ষ নিধনের মামলার বিষয়ে উপজেলা বন কর্মকর্তা তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধৈর্য ধরেছি। ধৈর্য ধরার ফলে প্রতিদিন তারা আমাদের গাছগুলো নির্বিচারে কেটে যাচ্ছে। মামলা ছাড়া আমাদের আর বিকল্প কোনো পথ ছিলো না।
এ ব্যাপারে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) কুতুব উদ্দিন জানান, মামলার আসামীদের নাম মামলার স্বার্থে বলা যাবে না।
অপরদিকে অবরোধের ৩য়দিন হাজীগঞ্জ উপজেলার কোথায়ও কোনো ঘটনা ঘটেনি।
দিনভর হাজীগঞ্জ বাজারসহ মহাসড়কে রিক্সা ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলেনি। উপজেলা সদর হাজীগঞ্জ বাজারে থেমে থেমে বেশ ক’বার অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও সহযোগী অঙ্গ-সংগঠন। এ সময় অবশ্য পৌর জামায়াতের ক’জন নেতাকে মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। অবরোধের অন্য দিনের মতো উপজেলার বাকিলা বাজারেও সন্ধ্যার পর বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।